Thursday, March 31, 2016

আমার হেলথ কমপ্লেক্স এ ব্লাড গ্রুপিং, সিবিসি, ইউরিন আরএমই এর মত তুচ্ছ পরীক্ষা করার ব্যাবস্থা নেই। আজ ১০০০০০ (দশ লক্ষ) টাকা মুল্যের এই টেলিমেডিসিন যন্ত্র স্থাপিত হল!কিছু বলার নেই।

Posted by আসাদ অপটিমাম on Wednesday, March 30, 2016

Thursday, March 10, 2016

জীবন থেকে নেয়া

জীবন থেকে নেয়া---
(এই পোস্ট পড়ে কেউ আমাকে কোন জ্ঞান / গালি দিতে আসবেন না দয়া করে।আমার ওয়াল, আমার মন যা বলবে তাই লিখব, কারো সমস্যা হলে প্লিজ ইগনোর করুন।)
_____________________
একান্ত ব্যক্তিগত কারণে কখনো বিসিএস এর জন্য প্রস্তুতি নেয়া , এমনকি ফর্ম পর্যন্ত হাতে ধরে দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার।
.
.
তবে আজকাল মনে হয়, এতে বরং আমার জন্য ভালোই হয়েছে।কারণ আমার সহ্যশক্তি এত বেশি না যে, অযোগ্য (একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন এবং পদমর্যাদা) লোকেদের অযৌক্তিক আবদার / পেশীশক্তি /রাজনৈতিক ভীতি প্রদর্শন মেনে নিতে পারতাম।নির্ঘাত নিজে মার খেতাম নাহয় মার দিতাম এবং পরিনতি স্বরূপ চাকরীটা ছেড়ে দিতে হত - willingly or by forced !!
.
.
আমি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকারের বেতন ভুক্ত কর্মচারী না।এমনকি সরকারি মেডিক্যাল থেকে জনগণের পয়সায় (!!!) পাশ করা ডাক্তারও না।তাই হয়তো আমার কোন তথাকথিত পেশাদার দায়বদ্ধতা নেই সমাজের কাছে !
আমি কর্পোরেট অফিসে তিন স্তরের নিরাপত্তা ঘেরা এসি রুমে বসে রুগী দেখি।সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিস sucker মেশিন দিয়ে রক্ত শুষে, ঘন্টার হিসেবে, জবাবদিহিতার তীক্ষ্ণ নজরে, যোগ্যতার মাপকাঠি তে ঘাম ঝরানোর বিনিময়ে---- নিরাপদ, নিশ্চিত, আরামদায়ক, স্বস্তির জীবনের স্বাদ প্রদান করে !!
ঝকঝকে তকতকে একবিন্দু বালু খুঁজে না পাওয়া হেল্থ সেন্টারে বসে মাঝে মাঝে ভীষন রকম মিস করি পানের পিক ফেলা হাসপাতালের সিঁড়ি, ফ্লোর, গুমোট গন্ধে ভরা ওয়ার্ড।আফা/সিস্টার বলে ডেকে ওঠা সহজ সরল সাধারণ রোগী।
.
.
কিন্তু পরক্ষণেই যখন পেপারে ,নেটে দেখি ডাক্তার পেটানোর খবর, গ্রেফতারি পরোয়ানা, গুগল সার্চ দিয়ে স্কুল কলেজের বাচ্চা থেকে হাউস ওয়াইফ বন্ধুটির ডাক্তার বনে যাওয়া; তখন ভাবি এই তো বেশ আছি। মাস যাচ্ছে, কর্পোরেট অফিসের কর্পোরেট কালচারে polished Occupational health specialist হয়ে ডা. ম্যাডামের সম্মান এবং handsome সম্মানী নিয়ে ! মন্দ কি !!
.
আচ্ছা, বাংলাদেশে কি এমন একটা পরিবারও আছে যেখানে সন্তান কে মনে মনে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখা হয় না ? খুব জানতে ইচ্ছে করে.........
.
হুম আমাদেরও যথেষ্ট ত্রুটি আছে।আমরা অনেক ডাক্তাররা মোটেও প্রফেশনাল না কাজের প্রতি
, পেসেন্ট কাউন্সিলিং এর ব্যাপারে খুব বেশি উদাসীন, communication gap ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা আমাদের। কিন্তু পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জানা প্রয়োজন ----ডাক্তার হাসপাতালের/সরকারের একজন এমপ্লয়ই মাত্র, মালিক না।হাসপাতালের কেবিন, খাওয়া, ঔষধের বিল ইত্যাদি কোন ডাক্তারের পকেটে যায় না।কেবিনের চাবি ডাক্তার তার এপ্রোনের পকেটে নিয়ে ঘুরে না।
.
.
আমরা কি জানি, সরকারি চাকরি করা ডাক্তারটিকে কিভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়াত করে চাকরি রক্ষা করতে হয় ? আমরা কি জানি, সেখানে একজন প্রথম শ্রেণীর সরকারি অফিসার, দেশের শ্রেষ্ঠ মেধার অন্ন, বাসস্থান , শৌচাগারের বর্ণনা ?? না আমরা জানি না, জানতে চাইও না।আর ডাক্তারদের সম্মানী নিয়ে আমি কিছু নাই বা বলি !
.
আমরা শুধু জানি, ডাক্তাররা কসাই, টাকা তৈরির মেশিন, কলমের খোঁচায় পাঁচশ/হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় !
কিন্তু আমরা দেখি না, দিনের পর দিন লাইব্রেরি তে পড়ে থাকা একটা উচ্চ ডিগ্রী প্রত্যাশী হতাশাগ্রস্ত যুবকটির ধীরে ধীরে বয়সের ভারে নুয়ে পড়া মাথা ,
আমরা দেখি না, সন্তানসম্ভবা স্ত্রী কে অপারেশন থিয়েটারে ফেলে কর্মস্থলে ডিউটিরত সদ্য বাবা হওয়া মন খারাপ করা ডাক্তারটিকে,
আমরা দেখি না হাতের মেহেদীর রং শুকিয়ে যাওয়ার আগে সিজার হাতে নিয়ে ওটিতে দাঁড়ান নবপরিনীতা বধূটি কে।
আমরা দেখি না ,সন্তান ফেলে নাইট ডিউটিতে ছুটে আসা মায়ের চোখের পানি।
.
"আমরা কখনো জানব না, একজন উজ্জ্বল মেধাবী মানুষ কিভাবে তিলে তিলে ডাক্তার নামক অসামাজিক প্রানীতে পরিনত হয়ে যায়"
.
কারণ --- তোমরা ডাক্তার, তোমাদের আবার কিসের বিয়ে সন্তান ঘোরাঘুরি শখ আহ্লাদ !!! ছিঃ এগুলো ভাবাও পাপ। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় (আর কেউ কি সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়ে না ডাক্তার ছাড়া?!!) লেখাপড়া করেছ এখন কবরে যাবার আগ পর্যন্ত ঘানি টানবা, ওক্কে........?!

সংকলিত লেখা

মুল লেখার লিঙ্ক এখানে