Monday, October 24, 2016

বাংলাদেশের প্রসূতি সেবা ও সিজারিয়ান ডেলিভারি

আপনি কখনো শুনেছেন হলিউড/বলিউডের কোনো নায়িকার সিজার করে বাচ্চা হয়েছে? আত্মীয় বন্ধু যারা ইউরোপ/আমেরিকায় বউ নিয়ে থাকে, তাদের বউয়ের ও সিজারে বাচ্চা হয়েছে শুনি নাই।
 তার কারন ওদের বাচ্চা হইবার আগে গাইনি ডাক্তার আত্মা শুকানো ভয় দেখিয়ে বলে না, পানি শুকিয়ে গেছে, নুচাল কর্ড (নার) প্যাঁচিয়ে গিয়েছে, পজিশন উল্টায়া গিয়েছে।
-
বিশ্বের কোথাও দাঁড় করানো অজুহাতে পেট কেটে বাচ্চা বের করে না, একমাত্র বাংলাদেশে বাচ্চা জন্ম দিতে গেলে গাইনি ডাক্তারদের হাজারো অজুহাত। আপনাকে এমন সব ভয় দেখাবে যে, অনাগত বাচ্চার সামনেই কাল্পনিক কাঠ-গড়ায় দাঁড় করিয়ে দিবে। বলবে, এ মুহুর্তে সিজার না করলে বাচ্চা বাঁচানো যাবে না, দায় দায়িত্ব আপনার। এছাড়াও ডেলিভারি পেইন নিয়ে ক্লিনিকে যাবেন তো দিবো
একটা ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্যাথা শেষ, এইবার এ অজুহাতেও পেট কাটো।
-
এখনতো আবার গাইনি ডাক্তাররা অজুহাতও দেখায় না, ডাইরেক্ট বলে দেয় আমি নরমাল ডেলিভারি করাই না।
-
কী আজব দেশ রে ভাই, এত সিজার ডেলিভারি বিশ্বের আর কোনো দেশে হয় কি?? অনেক মায়েরা ও কম যায় না, আগেই চুজ করে সিজারে বাচ্চা নিবে, একটুও কষ্ট সহ্য করবে না, এটা হল ডি-জি-টা-ল ফ্যাশন/ইস্টাইল।
-
আজব এই দেশে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষার হার, বৃক্ষ রোপন, টিকা দান, শিশু মৃত্যু হার রোধ, এসব কিছুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবুজ মার্ক পেলেও সিজার ডেলিভারি নিয়ে লাল দাগ খেয়ে বসে আছে অনেক বছর, সরকার কিন্তু স্পিকটি নট।
-
স্বঘোষিত নরমাল ডেলিভারি না করনেওয়ালা গাইনি ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ওয়াজিব হয়ে গেছে। এক বন্ধুর কাছে শুনলাম আমেরিকাতে নাকি বাইশ ঘন্টা ডেলিভারি, পেইনের পরেও ডাক্তার সিজার করে নাই, সুস্থ বাচ্চা হয়েছিলো, মা ও সুস্থ ছিল।
-
আমার পরিচিত এক গাইনি ডাক্তার (MBBS, DGO) পঁচানব্বই ভাগ নরমাল ডেলিভারি করাতো বিধায় কোনো ক্লিনিক তারে নিতে চায় না। এই ডাক্তার এ-ক্লিনিক ওই-ক্লিনিক, এ-জেলা ওই-জেলা ঘুরে ঢাকার মিরপুরের এক অখ্যাত ক্লিনিকে।
-
কিছুদিন আগে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হসপিটালে গিয়েছিলাম একজন ডোনার নিয়ে, হঠাৎ করেই রিসিভশনের দিকে নজর গেলো, দেখলাম একজন সিজারের পেসেন্টের স্বামী কাঁদতেছে। কাছে গিয়ে বিষয়টা জানতে চাইলে সে বলল, ভাই আমার বাসায় বউয়ের নরমাল ডেলিভারিই হইতো, কিন্তু রক্তস্বল্পতা ছিলো বলে নিয়ে আসলাম এখানে, ভাবলাম এখান থেকে রক্ত দিয়ে নিয়ে যাবো। কিন্তু নিয়ে আসার পর তাদের (ডাঃ) এমন অবস্থা, মনে হচ্ছে যেনো সোনার খনি পেলো। রক্ত দেয়ার পুর্বে এই টেস্ট সেই টেস্ট, অবশেষে বলে সিজার না করালে আপনার বাচ্চাকে বাঁচানো যাবে না। কি আর করমু কন, এখন তারা সিজার করাইয়া ১,৪২,০০০টাকার একটা বিল ধরাইয়া দিছে।
-

  সিদ্ধান্ত আপনার, আপনি এখন আপনার স্ত্রী/বোন/মাকে কি সিজার ডেলিভারি করাইবেন, নাকি নরমাল???

---Collected---

Wednesday, October 5, 2016

সব আনন্দ জগানন্দের...(মেডিক্যাল ভর্তি ইচ্ছুকদের প্রতি এই লেখাটি উৎসর্গকৃত)



সব আনন্দ জগানন্দর ই।তা না হলে এ ইঁদুর মারার কলে লেজটা সবার আগে ও ই বাড়িয়ে দেবে কেন ? ইঁদুর মারার কল মানে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার কথা বলছি।আজকে ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের হলে যে ছেলেটি সবার আগে প্রবেশ করে তার নাম জগানন্দ রায়।

শার্টে শরীরটা আঁটছেও না সাঁটছেও না।বাংলা কিংবা তামিল ছবির নায়কের মতোই ফেটে ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
আমি ওকে বললাম ‘পাঁচ মিনিট পড়ে ঢুকো’।

মাজা মোচড়াতে মোচড়াতে সে খানিকটা দূ্রে গেল ঠিক ই।ঘাড়ের একটা রগ ত্যাড়া হলে কিংবা কলেজের ভিপি হলে যা হয়,তাই হল। সে সাথে সাথেই ফিরে এল ‘ঐ রুমে যে সবাই ঢুকছে?’

এমন ভাবে চোখ পাকালাম ভিপি জগানন্দ আর রা করলো না..
আমরা হাতের কাজ শেষ করে দরজা খুলে দিলাম...
দুদ্দাড় সবাই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলো...অগ্যস্ত যাত্রার রিহার্সেল।
নির্বাক আটপৌ্রে দর্শক আমি।




নিষেকের পর ডিম্বক যে দশা প্রাপ্ত হয়-তাকে কি বলে ?
খাতা সাইন করতে করতে চোখ আটকে গেল কোশচেন টা তে।যেন কুয়োর মধ্যে নিজের প্রতিবিম্ব দেখছি।আজ থেকে ১৪ বছর আগে আমিও এমন এক ডিম্ব কে নিষিক্ত করে মেডিক্যাল লাইফের ভ্রুনের জন্ম দিয়েছিলাম।
যার ঘানি এখনও টানছি।

কুয়োর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের নিশ্চিত ‘কামড়া-কামড়ি’র ভবিষ্যতটা দেখতে পাচ্ছি।চাইছিলাম ‘সাদিয়া জাহান টুম্পার’ সব গুলো এন্সার যেন ভুল হয়।সে যেন গ্রে-গাইটনের দিস্তা দিস্তা কাগজের কালো অক্ষরে চাপা না পড়ে...
চাইছিলাম, সে যেন না পড়ে ‘চিকিৎসকের অবহেলায় রুগীর মৃত্যু’ নামক হলুদ সাংবাদিকতার পাতা ফাঁদে।
আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলাম এই অর্থহী্ন চাওয়া টা আমার পাপবোধের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিতে কোন লাভাকে উপর-মুখ করতে পারলো না।




জগানন্দের খাতাটা সাইন করছি...
হলে ঢোকাতে তার যত না তাড়া ছিল ‘গুলতি’ পূরনে যেন ততটাই অনীহা।
এন্সার শীট যেন সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চল।বসতি-হীন।
অনেককে দেখলাম ঢাকা শহরের বস্তির মত পুরোশীট ভরে ফেলছে কালো কালো গোল্লা গোল্লা খুপড়িতে।তাদের জন্য মায়া হল।

নির্ঘাত জগানন্দকে বাসা থেকে জোর করে পাঠানো হয়েছে।

মনে মনে ভাবছি মেডিক্যালে চান্স না পেলে সিউরলি সে জগতের কোন আনন্দ থেকেই বঞ্চিত হবে না।
বন্ধুর বিয়ে খাওয়ার আনন্দ,অফিস শেষে পেট চেদরিয়ে শুয়ে থাকার আনন্দ,ডাক্তারের পিণ্ডি চটকানোর আনন্দ।রাত-বিরেতে ঘুম না ভাঙ্গার আনন্দ।আইটেম পেন্ডিং না খাওয়ার আনন্দ।সাপ্লি না খাওয়ার আনন্দ।
কোন আনন্দ থেকেই বঞ্চিত হবে না জগানন্দ।

এ হাতেই হয়ত ভাংগবে ডাক্তারের চেম্বার।




জানের ভয়ে হয়তো জুতা ফেলেই দে-দৌড় দিবে এ হলেরই কেউ একজন।
ব্যস্ত ডাক্তার।
ভাংচুর হবে তার চেম্বার
কারন রোগীর মৃত্যুর জন্য আজরাইল না ডাক্তার সাব দায়ী, তিনি তো 'অমরত্ব' নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন।
আমি তার খাতাটাই সাইন করতে খুঁজছি।
কে সে ?

>> কালেক্টেড পোস্ট <<