Sunday, January 29, 2017

সরকারি চাকরি···চা পান সমাচার।


৩৪ তম বিসিএস।
 প্রথমেই ধাক্কা খেলাম, পি এস সি সুপারিশ করার পর জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা আটকে দিলো। কারন জানতে পারলাম বাবা বি এন পি করেন আর আমার আচরন সন্তোষজনক নয়।আমার বাবা মুদি দোকানি নির্বাচন তার জন্ন্য উ ৎসব, বেচাকেনা বেশি ।কখনো ভোট দেন নি প্রথম জানলাম NSI এর থেকে উনি দল করেন।বলে রাখা ভালো আমার বাবা চা পান খাওয়ান না।
 যাই হোক দীর্ঘ ৭ মাস পর ছাড় পেলাম।জয়েনিং করলাম dg health এ। এতদিন বন্ধুদের থেকে শুনতাম dg khub খারাপ জায়গা। খারাপ লাগলো না।  ১০.৩০ থেকে ৭.৩০ পর্যন্ত রূলস রেগুলেসন সততা পেশাগত দায়ীত্ব শেখালেন। কিভাবে একজন সৎ অফিসার! হতে হবে শিখতে পারলাম না সারাদিন এ একটা রসগোল্লা brain a glucose দেয় নি। dg গরিব মানুস।
সন্ধ্যায় জানিয়ে দিলো দুর্ঘম কলমাকান্দা,নেত্রকোনা যেতে হবে এবং সবাইকে এও বলে দিলেন অসৎ অফিসার থেকে দুরে থাকবেন। পোস্টিং প্লেস এ আসতে টাংগাইল থেকে ৩ টা মুড়ির টিন লাগে। লাস্ট ওয়ান লাইক রোলার কোস্টার। অফিস এ ডুকে statistician and head assitant কে ভয় পাচ্ছিলাম। কারন বন্ধু দের পরামর্শ চা পান ছাড়া নাকি উনারা কথা বলেন না।
আমি বাবার কাছ থেকে চা না খাওয়ানোর শিক্ষা টা নিয়েছি আর কিছু নিইনি মনে হয়। কিন্তু উনারা আমাকে অবাক করলেন maximum help with out tea!!!. ৫ টায় রউনা দিয়ে ১১.৩০ এ পৌছেছিলাম।১২.৩০ এ সব কাজ শেস শুধু UHFPO এর sign. উনি ব্যস্ত মানুস আসলেন ২ pm. Office না এসে বাসায়। আমিও বাসায় ই গেলাম। ৭ দিন এর প্রস্তুতি ছুটি সহ আমাকে ৭ দিন পর সকাল ৮ টায় আসতে বল্লেন।

অফিস।

টিউব লাইট নস্ট লাল বাত্তি আছে।
table ভরা daignostic pad personal pad!! Slip pad.
৮ টায় গেলাম খব ভালো লাগছিলো ৯-১০ company visit.... অনেক মানুস।
১১ টার আগে টিকেট কাউন্টার খোলেন না।
 এ সময় অফিসার গন pvt pad a pt দেখেন।
 ১১ টা থেকে ১ টা মিক্স রুগি then again pvt practice.
 প্রথম দিন বুজলাম। রাতে হস্পিটাল কোয়ার্টার এ থাকলাম। পাতলা কম্বল কলিগ এর। অ্যান্ড meghaloy border a freezing temparature. Next day RMO er পরামর্শ মতে store theke double size kombol nilam..nice one.
11 am RMO এর call Uno er office a meeting. আমি চিনি না .Rmo muhurte byk er bebostha korlo jaoar somoy DIAGNOSTIC আশার সময় ACI. আমি ভূল করে বলে ফেলেছিলাম hospital car or 2byk or ambulance. জানলাম গাড়ী এর ড্রাইভার নেই। ambulance nosto, byk nightguard chalay. Owo.

Next day

সকাল ৮ টা আমি হাজির এ দেখে সবাই হাসাহাসি করছিলো। ami boka manush.
BSMMU te kokhono 8 am giyechi bole mone pore na. First job to tai vablam sincere hoi.
এক কলিগ বললো emergency ektu dekhte ami gelam.
 Sacmo ra treatment dicche and no surprise for the sack of humanity they are also doing pvt practice in emergency room.!!!

Outdoor a pt ashto na amar kache karon Pore jenechi personal lobist ache amar colleague der!!!

Each and every pt wants to give money!
its there habit we just help them to slang our society after leaving this hospital complex And we are taking it as same!" tea bill".😃.

 Pathology te investigation pathalam emergency theke অখানে ও pvt. Owo.
 Ami confused hoye gelam ami ki pvt job a jojn korlam?

 Aktu por e pelam মারামারি রুগি। হাত মুঠো ভরা ৫০০ টাকার নোট, really লোভনীয়। চা খেয়ে জ্বিব পুড়ে যাবে ভয়। ফিরিয়ে দিলাম, বল্লাম আমার rank a ami shob cheye beshi sallary pai.amar eta dorkar nai.... eita bolar por sacmo der bollam table clear korte from pvt pad, dignostic pad. Bring back 10 tk ticket plus 3 tk ticket. They are good man.আমাকে দেখালো চকচকে সরকারি টিকেট। then they started my finale “ sir rest nen room a problem hole dakbo.” 5 times.লজ্জা পেলাম তাই চলে এলাম। কাল আবার যাবো সকাল ৮ টায় হাসির পাত্র হতে।


নাম প্রকাশে ভয়। suman sikder nam tai thak batch tato same MMC 06/07

>> কালেক্টেড পোস্ট << 

Wednesday, January 18, 2017

বেকাররা চাকরি না খুঁজে চাকরিই বেকারদের খুঁজুক

#off_topic
একবার কষ্ট হলেও পড়ে দেখতে পারেন।
লিখেছেন মান্নান স্যার।


আমার কাছে কিছু মানুষ চাকরির খোঁজে আসেন। তাদের ধারণা, আমি বলে দিলেই কোনও একটি জায়গায় তাদের চাকরি হয়ে যাবে। যারা আসেন, তারা প্রায় সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজ থেকে এমএ বা সমপর্যায়ের পরীক্ষায় পাস করেছেন। তাদের আকুতি দেখলে বেশ মায়া হয়। সময়মতো বুঝতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ পর্যায়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে তাদের একটা চাকরির জন্য পথে-পথে ঘুরতে হবে। একটি জাতীয় দৈনিকে সম্প্রতি ‘উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব বেশি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী এক কোটি দশ লাখ তরুণই নিষ্ক্রিয়, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের নিষ্ক্রিয়তা বেশি।’ নিষ্ক্রিয় মানে, তারা অন্যের হোটেলে (বাপের) বিনা পয়সায় খান। পত্রিকাটি এই তথ্যবহুল প্রতিবেদনটি লেখার সময় নবগঠিত সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের (সিডার) প্রকাশিত তথ্য ব্যবহার করেছে।

সিডারের এই তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করার কোনও কারণ নেই। যারা আমার কাছে চাকরির আকুতি নিয়ে আসেন, তাদের প্রায় সবাই সরকারি চাকরি প্রত্যাশা করেন। বলেন, বয়স চলে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আবার একদল শিক্ষিত বেকার দাবি তুলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স পঁয়ত্রিশ বছর করতে হবে। আমাদের দেশের তরুণদের মধ্যে দুই ধরনের প্রবণতা লক্ষণীয়। প্রথমে তারা উচ্চমাধ্যমিক পাস করলেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যতটা আগ্রহী, কারিগরি বা কর্মদক্ষতা বাড়ানোর শিক্ষা নিতে ততটা আগ্রহী নন। দ্বিতীয়ত খুব কম ক্ষেত্রেই কাউকে উদ্যোক্তা হতে দেখা যায়। সবাই চাকরি প্রত্যাশা করেন, কেউ চাকরি সৃষ্টির কথা ভাবেন না। পাশাপাশি অন্য একটি চিত্রও আছে।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে কমপক্ষে চার লাখ বিদেশি চাকরি করছেন। যাদের মধ্যে বৈধভাবে কাজ করছেন বিশ হাজারের মতো। এই বিদেশিরা, বছরে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে পাঠাচ্ছেন। চার লাখ মানুষ পাঁচ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছেন। পারার কারণ হলো, তাদের যে কর্মদক্ষতা আছে, তা আমাদের দেশের ‘উচ্চশিক্ষিতদের’ মধ্যে নেই। অথচ যে আশি লাখ বাংলাদেশি বিদেশে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন, তার পরিমাণ বছরে গড়ে পনের বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ফিলিপাইনের ত্রিশ লাখ শ্রমিক বিদেশ থেকে বাংলাদেশের তিনগুণ অর্থ নিজ দেশে পাঠাচ্ছেন। এর প্রধান কারণ ফিলিপাইন থেকে যারা বাইরে কাজ নিয়ে যাচ্ছেন, তাদের কর্মদক্ষতা আমাদের দেশের মানুষের চেয়ে অনেক বেশি আর তারা ইংরেজি ও আরবিতে কথা বলতে পারেন। সৌদি আরব বা মধ্যপ্রাচ্যের আধুনিক হাসপাতালগুলোতে বেশির ভাগ নার্স বা ডাক্তার হয় ভারতীয় নয় ফিলিপাইনের। কিছু আছেন ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়ার। সেই সব হাসপাতালে দেখা যাবে বাংলাদেশিরা হয় ক্লিনার, নয় ওয়ার্ড বয়। বিদেশে কাজের বুয়া পাঠাতে যত আগ্রহ বাংলাদেশে দেখা যায়, কর্মদক্ষ শ্রমিক পাঠাতে তেমনটা দেখা যায় না। ভারতে বিদেশ থেকে যে রেমিটেন্স আসে, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম।

সিডার বাংলাদেশ সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছে, পরিস্থিতি হয়তো তার চেয়েও ভয়াবহ। ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) এক পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে, বাংলাদেশে শতকরা ৪৭ ভাগ গ্রাজুয়েট হয় বেকার, না হয় তিনি যে কর্মে নিযুক্ত এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট হওয়ার কোনও প্রয়োজন ছিল না তার। প্রতিবছর বাংলাদেশে ২২ লাখ কর্মক্ষম মানুষ চাকরি বা কাজের বাজারে প্রবেশ করছেন। এই বিশাল-সংখ্যক কর্মক্ষম মানুষের মাত্র সাত শতাংশ কাজ পাবেন। এর অর্থ হচ্ছে, দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ বেকারের তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন। ভারত, পাকিস্তান বা নেপালের পরিস্থিতিও তেমন একটা ভালো নয়। ভারতে ৩৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ২৮ শতাংশ আর নেপালে ২০ শতাংশ মানুষ চাকরির সন্ধান করছেন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বা সমপর্যায়ের শিক্ষায় শিক্ষিত। অন্যদিকে সার্বিক পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ ভালো। ইনডেক্স মুন্ডি বলছে, বাংলাদেশে সার্বিক বেকারত্বের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫.০ শতাংশ, ভারতে ৮.৮ শতাংশ, পাকিস্তানে ৬.৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় এই সংখ্যা ৫.১ শতাংশ।

বিশ্বের সর্বাধিক বেকারের বাস জিম্বাবুয়েতে। শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষেরই কোনও কাজ নেই। আফ্রিকা বাদ দিলে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের অবস্থাও শোচনীয়। কসোবোয় ৩১ শতাংশ, গ্রিসে ২৮ শতাংশ, স্পেনে ২৬.৩ শতাংশ, পর্তুগালে ১৬.৮ শতাংশ, ইটালিতে ১২.৪ শতাংশ, আয়ারল্যন্ডে ১৩.৫ শতাংশ মানুষ বেকার। আর সৌদি আরব, বিশ্বের অন্যতম তেল সমৃদ্ধ দেশে ১০.৫ শতাংশ মানুষের কোনও কাজ নেই। সৌদি আরব বা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য তেলসমৃদ্ধ দেশের সমস্যা হচ্ছে, তেলের ভাণ্ডার তাদের সর্বনাশের প্রধান কারণ। তারা মনে করেছিল, তেলের প্রয়োজনীয়তা কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। ১৯৬২ সাল হতে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ড. আহমেদ জাকি ইয়ামানি সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী ছিলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ইয়ামানি অত্যন্ত বাস্তববাদী ছিলেন। একপর্যায়ে বলেছিলেন প্রস্তর যুগ শেষ হওয়ার পেছনে প্রস্তরের অপ্রাপ্যতার কারণ ছিল না। কারণ ছিল মানুষ প্রস্তরের বিকল্প আবিষ্কার করে ফেলেছিল। এক সময় তেলেরও প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যাবে যা বিকল্প জ্বালানি আবিষ্কারের ফলে এখন অনেক দেশেই দেখা যাচ্ছে।
সৌদি তেল এখন বিশ্ববাজারে সর্বনিম্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে সৌদি রাজকোষে টান পড়েছে। সরকার সেই দেশের সরকারি কর্মচারীদের বেতন ২০ ভাগ কমিয়ে দিয়েছে। সৌদি আরবের এখন আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে হজের মৌসুমের আয়, যে কারণে বর্তমানে একজন মানুষের হজ করতে যেতে হলে দু’তিন বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। বিশ্বে সম্ভাব্য দেউলিয়া হওয়ার দেশের তালিকায় সৌদি আরবের অবস্থান বেশ ওপরে বলে অনেকের ধারণা। এক পণ্যনির্ভর অর্থনীতির ঝুঁকি অনেক বেশি। জাকি ইয়ামানি তখন বলেছিলেন, পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই সৌদি আরবের উচিত হবে, তেলের অর্থ সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করা আর সৌদি আরবের মানুষকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করা। ইয়ামানি রাজ পরিবারের অংশ ছিলেন না। তাই তার কথাও তেমন একটা আমলে নেওয়ার প্রয়োজন সৌদি সরকার মনে করেনি।

১৯৮৬ সালে সৌদি বাদশাহ ফাহাদ ইয়ামানিকে বরখাস্ত করেছিলেন। বর্তমানে সৌদি তেলক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপীয় দেশের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। তেলসম্পদ লুণ্ঠন বন্ধ করার যোগ্যতা সৌদি আরবের নেই। অন্যদিকে ইরানের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অবশ্য তারা নিজেদের আরব মনে করে না। ইরান সব সময় দক্ষ জনসম্পদ উন্নয়নে তেলের অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এখন সে দেশ একটি পরমাণু শক্তি। যুক্তরাষ্ট্রও তাকে সমীহ করে আর সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদার রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত বেকার রাতারাতি তৈরি হয়নি। এটি দীর্ঘ দিনের অপরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠার ফল। বিশ্বের কম দেশই আছে, যেখানে চিন্তা-ভাবনা না করেই প্রতি বছর সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ বিষয় পড়তে যাওয়ার এমন হিড়িক লক্ষ করা যায়। একজন আজিম উদ্দিন সংস্কৃত বিষয়ে পড়ে এমএ পাস করে কী করবেন, তা তিনি জানেন না। পড়ছেন, কারণ তার একটা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি চাই। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ আর বিবিএ পড়ার একটা হিড়িক আছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকটা নিখরচায় পড়া যায় আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগে পাস করে বের হতে। সময়ও লাগে চার থেকে পাঁচ বছর। অনেক এমবিএ পাস করা গ্রাজুয়েটের কাছে জানতে চেয়েছি কী চাকরি করছেন? বলেন, একটি বহুজাতিক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করেন। মাস শেষে বেতন দশ হাজার টাকা। ঢাকা শহরে পনেরো থেকে বিশ হাজার টাকার নিচে কোনও ড্রাইভার পাওয়া যায় না। অন্য দিকে দেখা যায়, সরকার হয়তো একটি বিশেষ দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলো।
সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা পরদিন থেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করবেন—কিভাবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ আর এমবিএ খোলা যায়। আর এখন বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ করে ইসলামিক স্টাডিজ খোলার তোড়জোর পড়েছে। হঠাৎ কেন এমন তোড়জোর? কারণ এই বিভাগে ভর্তি হলে ক্লাস করতে হয় না। নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ দিলে সময়মতো এসে সার্টিফিকেট নেওয়া যাবে। এই সব ডিগ্রি ক্রেতার মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। কারণ এই ডিগ্রি দেখিয়ে তারা সহজে পদোন্নতি পেতে পারেন। এ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তেমন একটা ব্যবস্থা নিতে পারে না। কারণ তাদের হাত বেশ লম্বা ।


যদি বলি, উচ্চশিক্ষা হওয়া উচিত শুধু মেধাবীদের জন্য এবং তা পরিকল্পিতভাবে, তখন একদল বিশেষ ঘরানার রাজনৈতিক ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী ব্যক্তি হৈ চৈ ফেলে দেবেন। বলবেন, শিক্ষা একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। কারণ এই অধিকার শুধু প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। রাশিয়া বা চীনে ইচ্ছা করলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারে না। ফিনল্যান্ডে শুধু যারা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করবেন, তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। দেশে কতজন শিক্ষক, কতজন গবেষক প্রয়োজন, তার একটি ধারণা থাকতে হবে। সেভাবেই উচ্চশিক্ষার বিন্যাস ও পরিকল্পনা জরুরি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ অল্প বয়সী জনসংখ্যা। জাতিসংঘের হিসাব আনুযায়ী, আমাদের জনসংখ্যার ৪০ ভাগ মানুষের বয়স ২৬ বছরের নিচে। তাদের জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হলে তাদের বিদ্যায় দক্ষতার পরিমাণটা অনেক বেশি থাকতে হবে। একজন গাড়ির মেকানিক বিশ্বের কোনও দেশেই বেকার থাকবে না। কিন্তু একজন এমএ পাসকে নিউ ইয়র্কের রাস্তায় খালি বোতল বা ডাস্টবিনে কাগজ কুড়াতে নিয়মিত দেখা যায়। অনেকের কাছে জানতে চেয়েছি, কেন তিনি নিজ দেশ ছেড়ে এদেশে এসেছিলেন। উত্তরে জানালেন, ভালো জীবনযাত্রার খোঁজে। দেশে অন্তত তিনি রাস্তায় বোতল কুড়াতেন না। ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলে অভিবাসীদের কপাল পোড়ার ইঙ্গিত তিনি অনেক আগেই দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ গাড়ি মেরামতের গ্যারেজের মালিক পাঞ্জাবি শিখরা।


শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকলে চাকরি মিলবে—এমন ধারণা একেবারেই ভুল। প্যারিসের এক ট্যাক্সি ড্রাইভার আমাকে বেশ কয়েক বছর আগে বলেছিলেন, তিনি মিশর ও ফ্রান্সের দু’টি নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দু’টি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। কিছুদিন শিক্ষকতাও করেছিলেন। তা ছেড়ে দিয়ে এখন ট্যাক্সি চালান। আয়-রোজগার আগের তুলনায় দ্বিগুণ। আমি আর ড. মুনতাসীর মামুন একবার ব্রিটেনের উত্তরে ইনভারনেস গিয়েছিলাম। আমাদের ট্যুর গাইড কেম্ব্রিজ থেকে পিএইচডি করে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তা ছেড়ে এসে দেশে নিজের ট্যুর কোম্পানি খুলে বেশ ভালো আছেন। জনাদশেক মানুষকে চাকরিও দিয়েছেন। আমাদের দেশের অনেক ব্যবসায়ী ও শিল্প-উদ্যোক্তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, দেশে এত শিক্ষিত বেকার থাকতে, তারা কেন অন্য দেশ থেকে দ্বিগুণ বেতন দিয়ে লোক আনেন? সবারই একটি কমন উত্তর: আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের দক্ষতার অভাব আছে। কী দক্ষতা? কথা বলতে তাদের জড়তা আছে। ভাষার ওপর দখল খুবই কম। ইংরাজিতে দুই লাইন কথাও বলতে পারেন না, লেখা দূরে থাক। উপস্থাপনায় একেবারেই কাঁচা। আর সবসময় কেতাদুরস্ত হয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে কাজ করতে চান। মাঠে বা কারখানায় যেতে তাদের অনীহা প্রচণ্ড। আর বিশ্বে বা নিজ দেশে কী ঘটছে, সে সম্পর্কে অধিকাংশেরই অজ্ঞতা পর্বতসমান। কোনও-কোনও ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ভূমিকাও তাদের ছেলে-মেয়েদের কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তারা তাদের ছেলে মেয়েদের সবসময় কাছে রাখতে চান। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী গ্র্যাজুয়েটের চাকরি হলো। ক’দিন না যেতেই তারা বাবা এসে আমাকে বললেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা চাকরি হলে ভালো হয়। কারণ তিনি ছেলেটাকে তার কাছেই রাখতে চান। ছেলের সম্ভাব্য সর্বনাশের প্রথম ধাপ!
বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কমানোর উপায় হচ্ছে—এমন শিক্ষার ব্যবস্থা করা যেন চাকরিই যোগ্যপ্রার্থী খুঁজবে। কারিগরি, প্রযুক্তিগত, আইটি, নার্সিং, সুপারভাইজার ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা যায়, এমন শিক্ষারই প্রয়োজন এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অভ্যাস কমাতে হবে। এজন্য চাই—সবার মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির পরির্বতন। মেয়ে বিয়ে দেওয়ার সময় ছেলে এমএ পাস কিনা, তা খোঁজা বন্ধ করতে হবে অভিভাবকদের। একইভাবে ছেলেপক্ষ ছেলের হবু স্ত্রীর পেশাটা কতটুকু সমাজে কাজে লাগছে, তাতে গুরুত্ব দিতে হবে। মনে রাখতে হবে উন্নতবিশ্বে যেভাবে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে, তাতে সে সব দেশে দ্রুত কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের স্থলে প্রযুক্তি ব্যবহার হওয়া শুরু হয়েছে। ইউরোপে এখন গাড়ি বা ট্রেন চালাতে আর চালক লাগছে না। সে কাজটি প্রযুক্তি করছে। কিন্তু সেই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পেছনে একজন মানুষের প্রয়োজন, যার সে বিষয়ে জ্ঞান আর দক্ষতা আছে।

আমাদের সেই মানুষই তৈরি করতে হবে। তেমনটি হলে দেশে আর উচ্চশিক্ষিত বেকার তেমন একটা থাকবে না। আর বাংলাদেশে যে বিদেশি পুঁজি আসবে, তা মূলত হবে সেবাখাতে। শিল্পখাতে তেমন একটা নয়। বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ টেলিকম কোম্পানিতে সব মিলিয়ে জনবল হচ্ছে চার হাজারের নিচে। সবাই কর্মদক্ষ জনশক্তি। তাদের চাকরির কখনও অসুবিধা হবে না। এসব বিষয় গুরুত্বসহ বিবেচনা করে সামনে এগুতে হবে। শুধু একটা ডিগ্রি কাজ দেবে না। দক্ষতা থাকলে কাজের অভাব হবে না।
###ধন্যবাদ

Saturday, January 7, 2017


খবরের বাকি অংশের লিঙ্ক >> Click Here <<
এই খবর আমাদের সময় ০৫.০১.২০১৭ তারিখে প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়েছিল।
খবরটি কিছু ব্যাখ্যা করে বিবেচনা করা যাক।

** উচ্চ  ফি --> বি এম ডি সি সাইট অনুযায়ী দেশের ডাক্তার সংখ্যা 75700জন ( সুত্র http://bmdc.org.bd/doctors-info/ ) এর মধ্যে কত জন ডাক্তারের ফি ৩০০ টাকার উপরে  বিবেচনা করবেন।

** এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে  প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার বিপরীতে কমিশন, ওষুধ কোম্পানি থেকে কমিশন, উপহার ও নানা ধরনের সুবিধা নেওয়া, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওষুধ লেখা ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করানোর অভিযোগ রয়েছে। --> এই সুবিধা কত % ডাক্তার নেন / পান? যারা সুবিধা নেন/ পান তারা তো চিহ্নিত ডাক্তার, তার পরেও তাদের কাছে রোগী রা যান কেনো?

** একদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা কম, অন্যদিকে রোগীর সংখ্যা বেশি। পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাদের সিরিয়াল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। --> পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকার কারন এবং তা দূর করতে ব্যাবস্থা নেয়া হয় না কেনো?

** সরকারি হাসপাতালে রেফারেল সিস্টেম চালু না থাকায় রোগীরা চাইলেও একজন সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক বা অধ্যাপকদের নাগাল পান না। --> রেফারেল সিস্টেম চালু হয় না কাদের ইশারায়? তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হয় না কেনো?

** এক বছরের বেশি সময় অপেক্ষার পর ২০১৬ সালের অক্টোবরে ওই চিকিৎসকের সাক্ষাৎ পান আনোয়ারা বেগম। আনোয়ারা বেগমের স্বজন বলেন, আত্মীয়স্বজনের পীড়াপীড়িতে কিডনি ফাউন্ডেশনের অধ্যাপককে দেখানোর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এক বছরের বেশি সময়। রোগী দেখার পর চিকিৎসক যেসব টেস্ট দিয়েছেন সেই রিপোর্ট দেখাতে আবার তিন মাস অপেক্ষা করতে হয়। রোগীর ক্রিটিক্যাল মুহূর্তেও সিরিয়াল পেতে কোনো ছাড় পাওয়া যায় না। --> দেশে কি  আর কোন ডাক্তার নাই, যে ১ বছর অপেক্ষা করতে হবে?

** চিকিৎসক রাত ২টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। এর মধ্যে ছোটাছুটি করেন বিভিন্ন হাসপাতালে। ফলে রোগীরা সেবা না পেয়ে বিরক্ত। --> এমন ডাক্তার এর কাছেই কেন যেতে হবে ? দেশে অনেক ভাল চিকিৎসক আছেন, কিন্তু তারা প্রচারে নেই। তাদের খুজে বের করা কঠিন কিছু নয়।

** রোগী দেখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় দেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। --> সময় দিতে পারেন না যে সব ডাক্তার তাদের সংখ্যা নগন্য। তাদের এভয়েড করা কঠিন কিছু নয়।

শুধু সমালোচনা না করে কি করে হেলথ সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায় তার দিকে মনযোগী হওয়া দরকার। সরকারি পলিসি যতদিন স্তান্টবাজি মুক্ত না হবে তত দিন অবস্থার উন্নতি হওয়ার সম্ভবনা নাই বললেই চলে। আল্লাহ পাক সংশ্লিষ্ট সবাই কে সুমতি দান করেন। আমীন

Wednesday, January 4, 2017

আপনার গায়ে কি মানুষের রক্ত?!!

সাংবাদিক ভাই, আপনাদের শরীরে কি মানুষের রক্ত?

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সহযোগী অধ্যাপকের স্ত্রী, কন্যা স্পিডবোট দূর্ঘটনায় মারা গেছেন, সেই চিকিৎসক এবং তাঁর সহকর্মী আরেকজন চিকিৎসক এখনো হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি আছেন। কিন্তু আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা নিউজ করলেন-“ভোলায় ডাক্তারদের সাপ্তাহিক হাট বাজার শেষ করে বরিশালে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ভোলা থেকে অবৈধ ভাবে কামানো দুই ডাক্তারের কাছে থাকা ২০ লক্ষ টাকাও নদীতে ভেসে যায় বলেও নিশ্চত করেছেন আমাদের ওই প্রতিনিধি(ভোলা নিউজ ডটকমের ভেদুরিয়া প্রতিনিধি মঞ্জুরুল আলম)”। শুধু নিউজই না, নিউজের মন্তব্যে সংবাদভাষ্যে বলা হলো, এই দূর্ঘটনা আল্লাহর গজব, ভোলার গরীব মানুষের কষ্টের টাকা এই চিকিৎসকেরা লুট করে নিয়ে যায়।

কতটুকু স্পর্ধা থেকে “ডাক্তারদের হাট বাজার” কথাটা একজন চিকিৎসকের স্ত্রী কন্যার মৃত্যু সংবাদের
সাথে লেখা যায়! কতটুকু আক্রোশ থেকে একই মৃত্যু সংবাদে চিকিৎসকের উপার্জনকে “ভোলা থেকে অবৈধ ভাবে কামানো...২০ লক্ষ টাকাও নদীতে ভেসে যায়” লেখা হয়! সাংবাদিক ভাই, আপনাদের গায়ে কি মানুষের রক্ত?

কথাগুলোর জবাব দিতে বা বিদ্বেষ ছড়াতে এই লেখা নয়, আসুন কিছু তথ্য জেনে নেই।
 ভোলা জেলার প্রতি ২০ লক্ষ ৩৭ হাজার লোকের জন্য মাত্র একজন সরকারী অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ আছেন(জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কন্সাল্টেন্টের একমাত্র পদটিও প্রায় সব সময় ফাঁকা থাকে)। সেই অর্থপেডিক বিশেষজ্ঞও আবার এনেস্থেশিস্টের অভাবে কাগজে কলমে অকার্যকর(এনেস্থেশিয়া ছাড়া ছোটখাট কাজ ছাড়া অর্থোপেডিক চিকিৎসা অসম্ভব)। জেলার গত ১ বছরে সর্বোচ্চ প্রথম ৫ টি স্বাস্থ্য সমস্যার এবং মানুষের মৃত্যুর অন্যতম কারণ দূর্ঘটনা/আঘাত জনিত বা অর্থপেডিক সমস্যা। জেলায় অর্থপেডিক রোগীর চাহিদা এতই বেশি যে গত বাৎসরিক হেলথ বুলেটিনে সিভিল সার্জন ভোলা জেলায় একটি ট্রমা সেন্টারের সুপারিশ করেন। ২০(+২) জন চিকিৎসক পদের বিপরীতে বর্তমানে ১০(+২) জন চিকিৎসক আছেন, সিভিল সার্জনের ভাষ্য ভোলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকতে চান না।
 বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর মাঝে ৫-৭ জন অর্থোপেডিক প্র্যাকটিস করেন যার মাঝে কেউই ভোলার স্থানীয় নন, সবাই বরিশাল নয়ত ঢাকা থেকে আসেন।

এই যখন পরিস্থিতি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মানের একজন অর্থপেডিক বিশেষজ্ঞ যখন তাঁর ঢাকার প্র্যাক্টিস ছেড়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে স্ত্রী কন্যাসহ নিজ গ্রামের মানুষের(এখানে স্ত্রীর হবে) চিকিৎসা করতে আসেন তখন তাঁর এই প্র্যাক্টিস(আমি বলবো সেবা)কে “হাট বাজার, অবৈধ উপায়ে কামানো” বলা হয় তখন মনে প্রশ্ন জাগে, সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনার গায়ে কিসের রক্ত”?

কয়েকমাস আগে ঠিক একইভাবে ভোলা অঞ্চলের একমাত্র শিশু বিশেষজ্ঞ (আড়াই লাখ জনগোষ্ঠীর এক চতুর্থাংশ ৬০ হাজার অনুর্ধ ৫ বছর বয়সী শিশুর চিকিৎসক) কে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে(ইঞ্জেকশন দিয়ে) একটি শিশুর মৃত্যুর পর পেটানো হয়, পুলিশ তাঁকে নিরাপত্তা দিতে গ্রেফতার করে। অথচ শিশুদের শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় এটি অপরীহার্য।

আরো দশ বিশ বছর আগে, একই অঞ্চলে একজন নবীন চিকিৎসক প্র্যাক্টিস শুরু করেছিলেন। প্রেস্ক্রিপশনে টাইপ করা যার হাতের লেখা, তাঁকে একবার বাসায় কলে যেতে খুব চাপাচাপি করা হয়, হাতে থাকা রোগী শেষ করতে কিছুক্ষণ দেরি হওয়ায় তাঁকে অন কলে বাসায় নিয়ে গিয়ে রোগীর সামনে দরজা বন্ধ করে পেটানো হয়। তিনি সেই যে এলাকা ছাড়লেন আর কখনো ঐ এলাকায় জাননি, তিনি এই মূহুর্তে দেশ সেরা একজন ___স্পেশালিস্ট, তাঁর কাছে সিরিয়াল দিতে ৩ মাস অপেক্ষা করতে হয়। তাঁর নিজ এলাকার মানুষ কিভাবে বঞ্চিত হলো? কেন?

সাংবাদিক ভাই, আপনার গায়ে কি মানুষের রক্ত?
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে বছরে বাজেট কত সরকারের জানেন? ১৭ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ভারতে কত রোগী যায় জানেন? ৫ লাখ রোগী(২০১৫ সালের হিসেব), বছরে ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, চীন মিলে কত হাজার বাংলাদেশী টাকা বিদেশে পাচার হয় জানেন? ২০ হাজার কোটি টাকার বেশী(একটি রিপোর্টে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কোটি বলা হয়েছে)। পাচার কারণ একজন রোগী বৈধ ভাবে ৫০০ ডলারের বেশী নিয়ে যেতে পারে না, এর বাইরে বাকি সব টাকা অবৈধ উপায়ে(হুণ্ডি ও অন্যান্য) পাচার হয়। তাঁর মানে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পকেটের পয়সায় ২১ হাজার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, ৭০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী(সকল পর্যায়ের), ১৬ কোটি মানুষের জন্য নির্দিষ্ট বিনামূল্যের ওষুধ, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সরঞ্জাম, ওয়ার্ডবয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যা কিছুই পুষেন তাঁর চেয়ে বেশী টাকা শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য হাতে গোণা ৪-৫টি দেশ, সে দেশে যেতে তাঁদের ৩০০-৫০০ দালাল প্রতিষ্ঠান ও আরেকটি নির্দিষ্ট প্রজাতির পেটে যায়।
হ্যাঁ এই নির্দিষ্ট প্রজাতি সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলে, বাংলাদেশের চিকিৎসক, হাসপাতালের উপর আস্থাহীন করে তোলে, চিকিৎসকদের নিরাপত্তাহীন করে তাঁদের সম্মানহানী করে
 হ্যাঁ চিকিৎসকেরাও দোষী, কারণ তাঁদের নিজস্ব কোন আকার নেই, যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্র ধারণ করে। ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানী তাঁদের প্যাড-কলম-বিদেশভ্রমণ দিয়ে কেনে, ক্লিনিক ব্যাবসায়ীরা রোগী ধরার দালাল-কমিশন-চালু চেম্বারে এসিরুম দিয়ে কেনে, সুবিধাবাদী নেতা ভালো পোস্টিং, প্রমোশন আর স্ট্যান্টবাজ মন্ত্রী ধমক আর শাসন দিয়ে কেনে। ওষুধ কোম্পানীর মালিকেরা ১টাকার ওষুধ ১০টাকায় বিক্রি করে তাতে দোষ হয় না, ক্লিনিকের মালিক ১টাকার পরীক্ষা ১০টাকায় করায় তাঁর দোষ হয় না, স্ট্যান্টবাজ মন্ত্রী জনগণ শুধু প্রেস্ক্রিপশন মানে রোগের ব্যবস্থাপত্র ফ্রির জায়গায় সব কিছু ফ্রি হবে বলে পাবলিককে উস্কায় দিয়ে নিজেরা সিঙ্গাপুর ব্যাংককে হোল বডি চেক আপ করায় তাতে দোষ হয় না, একজন চিকিৎসক নিজ গ্রামে, নিজের সাপ্তাহিক ছুটির দিনটা বিসর্জন দিয়ে স্ত্রী কন্যা সহ সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে গেলে সাংবাদিক ভাইদের রক্তে ২০ হাজার কোটি টাকার দালালীর পারসেন্টেজ টগবগ করে ফুটতে থাকে। যেহেতু ওস্তাদে বলছে চিকিৎসা ফ্রি, যেহেতু বাংলাদেশের মানুষ সরকারি হাসপাতালে যায় ফ্রিতে ওষুধ নিতে আর আসল অসুখে যায় প্রাইভেট ক্লিনিক আর এপলো ইউনাইটেড স্কয়ারে তখন আর তাঁদের সামর্থ্যে আর ক্ষমতায় কুলায় নায়।
নেতা-ক্লিনিক মালিক-ফার্মার মালিক-জনগণের ফ্রি চিকিৎসার আকাঙ্ক্ষার পাপে চিকিৎসক কসাই হয়ে যায়।
 আসুন এক সত্যিকার কসাইয়ের ভিডিও দেখি, এই কসাই গতকাল রাতে একজন রোগীকে মাত্র ৫০ সেকেন্ড দেরি করে দেখায় একজন দেবতারূপী রোগীর ছোঁয়া পেলেন, হ্যাঁ চিকিৎসক তখনো আরেকজন অতিজরুরি রোগী দেখছিলেন(রোগীর নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছিল যাকে আগে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে), এবং ঘটনা ঘটে রাত দশটা ২২ মিনিটে, তিনি সকাল ৯টা পর্যন্ত ঐ একই ইমার্জেন্সিতে ডিউটি করেছেন বিনা দ্বিধায়।

সাংবাদিক ভাই আপনার গায়ে কি মানুষের রক্ত?

দালাল, রাজাকার, বেজন্মা শব্দগুলো অভিধান থেকে মুছে দেয়া হোক।

( হ্যাঁ লোকাল পত্রিকার নিউজ বলে বিগশট সাংবাদিক ভাইয়েরা এড়িয়ে যাবেন, কিন্তু বিগ শটরাও এই সমাজের বাইরে না, যেমন কমিশন খাওয়া চিকিৎসকরাও আমাদের পেশার বাইরে না, ঐ পত্রিকার সম্পাদকের নাম, প্রতিবেদকের নাম, ওয়েব সাইট সব কিছুই আছে, শুধু চিকিৎসকদের নামগুলো এখানে নাই লিখলাম)।

link >  https://www.facebook.com/mohib.nirob/videos/10210399736965999/

link > https://www.facebook.com/mohib.nirob/videos/10210399737926023/

>> কালেক্টেড পোস্ট <<