Tuesday, December 11, 2018

নতুন বাংলাদেশকে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নেন...

যে দিনটায় ভিকারুন্নিসার শিক্ষিকা গ্রেপ্তার হলেন সেই দিনটা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য খুব একটা কষ্টের দিন। এই দিনের আগের বাংলাদেশ, আর এই দিনের পরের বাংলাদেশ এক হবেনা। বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের কাছে খুব ভয়ের একটা মেসেজ গেলো যে নকল ধরলে এমন পরিণতিও হতে পারে। 

এইযে ডাক্তার পেটানো শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশে, এতে একটা ক্ষতি হয়েছিলো আপনারা নিজেরা টেরও পান নাই। এখন গ্রামের দিকের ডাক্তারেরা একটু ক্রিটিক্যাল ইমার্জেন্সী রোগী হলেই তাদের শহরে রেফার করে পাঠিয়ে দেন, কোন ঝুঁকি নেন না নিজেরা চিকিৎসা করার। কারন রোগীর কিছু একটা হয়ে গেলে পরে মানুষ ডাক্তারের উপর চড়াও হবে। একজন রোগীকে সদরে রেফার করে দেয়ার অধিকার ডাক্তারদের আছে। এতে করে দেখা যায় অনেক রোগীর হয়তো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে উপকার হতো, কিন্তু শহরে যেতে যেতে রোগীটা সেই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়, অনেক সময় মারাও যায়।

এই গ্রেপ্তার বাংলাদেশের শিক্ষকদেরও তেমনই একটা মেসেজ দিলো। নকল টকল ধরলে তাদের জেলে যেতে হবে, কি দরকার তাহলে ঝামেলা করার! কেউ চুপে চুপে নকল করলে তো তার কোনকিছু আসে যায়না। সবার আগে নিজের জীবন বাঁচানো ফরজ। এইযে ভিকারুন্নিসার তিন শিক্ষিকা ফেঁসে গেলেন, তারা যদি মেয়েটার হাতে ফোন দেখেও কিছু না বলে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতেন তাহলে কি তাদের আর এই বিপদে পড়তে হতো? কেউ তাদের ফাঁসি আর দশ বছরের কারাদন্ড দাবি করতো?

শিক্ষকেরা পরিস্থিতি ওয়াচ করছেন। এক প্রকার ধরেই নেয়া যায় শিক্ষকেরাও ডাক্তারদের মতোই নিরব বিপ্লবের দিকেই আগাবেন। যাদের কাজ জাতির মেরুদন্ড সোজা করা তাদের নিজেদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার জন্য ছাত্রদের এত তৎপরতা দেখে যদি তাদের ক্ষোভ জন্মে তাতে কি তাদের খুব একটা দোষ দেয়া যায়? তখন যদি ছাত্রদের মেরুদন্ড গড়ার বদলে যদি শিক্ষকেরা ছাত্রদের ভেতর ঘুণপোকা ঢোকানোর আয়োজন করেন তাহলে কিছু কি করার আছে? ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকেরা যে রকম প্রতিহিংসা দেখাচ্ছেন শিক্ষকদের প্রতি, তার একশো ভাগের একভাগও শিক্ষকেরা নিরবে দেখানো শুরু করেন দশ পনেরো বছর পর একটা জাতিকে হারিকেন দিয়েও আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

এবং তা ই ঘটতে যাচ্ছে আসলে। সামনে হয়তো টিচাররা নকল করতে দেখলেও না দেখার ভান করবেন, পড়া শিখে আসলো বা না আসলো কিছুই বলবেন না ছাত্র যদি মনে কষ্ট পায় তা ভেবে, হয়তো অভিভাবককেও আর পারতপক্ষে ডাকবেন না। কিসের এত ঠেকা তাদের, বেশী আদর্শ দেখাতে গেলে কি হয় তা তো তারা অলরেডি জেনেছেন! আপনারা যে তাদের টাকা দিয়ে রাখা কাজের লোকের মত করে বিবেচনা করছেন, তারাও হয়তো তখন ছাত্রছাত্রীদের কাস্টোমার হিসেবেই বিবেচনা করবেন। সেধে এখন যেটুকু এফোর্ট দেন তখন হয়তো তা আর দিবেন না। তাদের কাজ ক্লাশ নেয়া পরীক্ষা নেয়া, তারা তা নিবেন, কেউ পড়ে আসলো কি না কিংবা নকল করে পরীক্ষা দিলো কিনা তা আর কেয়ার করবেন না। শিক্ষাব্যবস্থায় এসবের ফলাফল কি হবে আপনারা নিজেরাই বুঝুন!

এই গ্রেপ্তারের দিনটা ছাত্র ছাত্রীদের মনোভাবও পালটে দিবে। তারা আর শিক্ষকদের পাত্তাও দিবেনা। তারা জানবে দুই পয়সার কাজের লোকের মত শিক্ষককেও চাইলেই ছাঁটাই করে দেয়া যায়, জেলে পুরে দেয়া যায়। এবং এতে ডিজিটাল নকলসহ সব ধরনের নকলই উৎসাহিত হবে। কারন বাংলাদেশের জনগণ রায় দিয়েছে নকলের শাস্তি হওয়া উচিত মাথায় হাত বুলিয়ে বলা- বাবু আর এমন করো না! তারা জানবে সেটাই সঠিক, সেটাই তাদের অধিকার। আগে শিক্ষকেরা পরীক্ষার হলে গার্ড দিতেন, আর এখন থেকে বেঞ্চে বেঞ্চে গিয়ে শুধু সবাইকে বলবেন বাবুসোনা এমন করেনা! সামনের বেঞ্চ থেকে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে পেছনের বেঞ্চে যাবেন, পেছনের বেঞ্চে যেতে যেতে দেখবেন সামনের ছাত্রছাত্রীরা আবার অন্য পকেট থেকে নকল বের করে লেখা শুরু করেছে। জিনিসটা একটু ফানি শোনাচ্ছে, কিন্তু প্রিটিমাচ বিষয়টা ঠিক এই রকম যদি না ও হয় এর কাছাকাছি কিছুই হবে!

অনেক তো বিপ্লব করলেন। অনেক মানবতার বাণী শোনালেন। এখন এই নতুন বাংলাদেশকে গ্রহণ করার জন্য আপনারা প্রস্তুতি নেন...
©Shuvo Kamal

Saturday, December 8, 2018

ছেলে যে কোথাও চান্স পেল না!

আনিসুল হক
‘আমার ছেলে যে কোথাও চান্স পেল না? এখন আমি কী করব?’

এক মা তীব্র হতাশায় জর্জরিত হয়ে আমাকে ফোন করেছেন। আমি অবশ্য ফেসবুকে তাঁর কর্মকাণ্ড দেখতে পাচ্ছিলাম। তিনি তাঁর উচ্চমাধ্যমিক পাস ছেলেকে নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। চট্টগ্রামে যেদিন যান, সেদিন কী কারণে গাড়িঘোড়া চলছিল না, তাঁরা বহু কষ্টে ট্রেনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে সক্ষম হন। তাঁরা সিলেটে গেছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে, জাহাঙ্গীরনগরে গেছেন—এসব দেখছি। শেষে পেলাম তাঁর সেই ফোন কল, ‘আমার ছেলেটা যে কোথাও চান্স পেল না!’

তারপর বললেন, ‘জানেন, ওর খুব শখ ছিল, আইবিএ পড়বে, আমি আর ও সারা রাত একসঙ্গে অঙ্ক কষেছি...হলো না। আসলে আমি ওকে জোর করে ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং করিয়েছিলাম, ওর তো ইচ্ছা ছিল না, তবু...।’
আমি বললাম, ‘কোথাও চান্স পায়নি, বেসরকারি ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও না?’
‘চান্স পেয়েছিল। ও বেসরকারিতে পড়বে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাওয়া এক শিক্ষার্থীর মায়ের এ কথাগুলো থেকে কতগুলো সূত্র আপনা–আপনি চলে আসে।
ছেলে পড়তে চায় ব্যবসা, মা পড়াতে চান ইঞ্জিনিয়ারিং। মা-বাবা কী চান, এটা একদমই বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, শিক্ষার্থী নিজে কী পড়তে চায়। কী করতে তার ভালো লাগে। যার যা করতে ভালো লাগে, যে যা পড়তে চায়, যে যা হতে চায়, তাকে তা-ই পড়তে দিন, তা-ই হওয়ার জন্য লড়াই করতে দিন।

এ কথা সবাই বলেছেন। সব সময় বলেন।

 এই তো সেদিন কিশোর আলোর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। তিনিও একই কথা বললেন কিশোরদের, ‘তোমাদের যা করতে ভালো লাগে, সেটা মন দিয়ে করো।’

বিশ্ব দাবায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারতীয় বিশ্বনাথন আনন্দ ভারতের পত্রিকা টেলিগ্রাফ–এ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন সফল হওয়ার সূত্র, ‘আপনি যা করেন, তা আপনার পছন্দ করতে হবে। আপনি সেটা করতেই থাকবেন। হাল ছাড়বেন না। অনেক কষ্ট হবে, অনেক ব্যর্থতা আসবে। কিন্তু আপনি যেহেতু জিনিসটা পছন্দ করেন, কষ্ট–ব্যর্থতা আপনার কাছে কঠিন কিছু মনে হবে না।’


জীবনটা সন্তানের। বাবা-মায়ের নয়। আমরা যারা বাবা-মা, তারা তাদের অপূর্ণ ইচ্ছাটা সন্তানের ওপর চাপিয়ে দিই। প্রত্যাশার ভারে সন্তানের জীবনটাকে শ্বাসরোধী করে তুলি। এটায় হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কা থাকে বেশি।

দুই নম্বর কথা হলো শিক্ষার্থীরও একটা স্বপ্ন থাকতে পারে। লক্ষ্য থাকতে পারে। এই স্বপ্ন পূরণ না–ও হতে পারে। বিশেষ করে কী পড়ব, কোথায় পড়ব, কোথায় ভর্তি হব, এসব নিয়ে সবার স্বপ্ন পূরণ হবে না। এটা একটা গাণিতিক বাস্তবতা। প্রায় ৮ লাখ ৫৮ হাজার ছেলেমেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন আছে প্রায় ৫০ হাজার। সহজ হিসাব হলো, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে না আট লাখের বেশি ছেলেমেয়ে। তেমনিভাবে এ বছর প্রায় চার লাখ তরুণ–তরুণী বিসিএস পরীক্ষায় বসছে, কিন্তু পদের সংখ্যা মাত্র এক হাজার। তার মানে ৪০০ জনে একজন বিসিএসে উত্তীর্ণ হবে। ৩ লাখ ৯৯ হাজারেরই প্রত্যাশা ভঙ্গ হবে। তাই বলে এই বিপুলসংখ্যক যুবকের জীবন শেষ হয়ে যাবে?

এ পি জে আবদুল কালাম হতে চেয়েছিলেন বিমানবাহিনীর পাইলট। দেরাদুনে গেছেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে। আটজন নেবে, তিনি হলেন নবম। মন খারাপ করে নদীর ধারে বসে আছেন তিনি। এই সময় এক সাধু এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি অন্ধকারে নদীর ধারে একা বসে আছো কেন?’
‘আমার জীবন ব্যর্থ হয়ে গেছে। এই জীবনের কোনো মানে নেই। আমি বিমানবাহিনীর ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেছি।’
সাধু বললেন, ‘তুমি ওঠো। এর মানে এই যে নিয়তি তোমার জন্য বিমানবাহিনীর পাইলট হওয়া ঠিক করে রাখেনি। তুমি অন্য কিছু হবে, তাই ঠিক করে রেখেছে। তুমি তোমার নিয়তিনির্ধারিত গন্তব্য অনুসরণ করো।
 তুমি সফল হবে।’
এ পি জে আবদুল কালাম ভারতের বিখ্যাত বিজ্ঞানীই কেবল হননি, ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।

তিন নম্বরে আমার বলার কথাটা হলো, সন্তানের লড়াই সন্তানকেই করতে দিন। চামচে করে তুলে তাকে খাওয়াবেন না। আমার আব্বা মনীষী-উক্তি আওড়াতেন, শিশুকে প্রকৃতির কোলে ছেড়ে দাও, প্রকৃতিই শিশুকে শিক্ষা দেবে।
এবার জীবন সম্পর্কে আমার প্রিয় দুটো উক্তি আমি আবারও বলে নিতে চাই। আইনস্টাইন বলেছেন, ‘জীবন হলো বাইসাইকেলের মতো, সব সময়
চালাতে হয়, তা না হলে পড়ে যেতে হয়। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, প্যাডেল ঘোরাতে হবে, থামা যাবে না।’ আর দ্বিতীয় কথাটা বলেছেন আমেরিকান কবি রবার্ট ফ্রস্ট, ‘জীবন সম্পর্কে আমার সমস্ত অভিজ্ঞতা আমি মাত্র তিনটা শব্দে বলে যেতে পারি—জীবন চলেই যায়।’

প্রতিটা জীবন সুন্দর। প্রতিটা জীবন অর্থপূর্ণ। প্রতিটা মানুষ এই পৃথিবীতে একটা আলাদা তাৎপর্য নিয়ে এসেছে, সাফল্যে–ব্যর্থতায় আশায়–আনন্দে দুঃখে–তাপে তা চরিতার্থতা লাভ করে। আমাকে ডাক্তার হতেই হবে, আমাকে ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে, এই জেদের কোনো মানে হয় না। পারফেকশনিস্ট বা শুদ্ধতাবাদী হওয়ারও কোনো মানে হয় না। এই প্রকৃতিতে কোথাও কোনো সরলরেখা নেই। একটা জিনিসও দেখাতে পারবেন না, যেটা প্রকৃতি বানিয়েছে, কিন্তু যা সরলরেখার মতো সোজা। হতেই পারে না। প্রকৃতি পারফেকশন বা নির্ভুলতা বা ছাঁচে ফেলা জিনিস তৈরি করে না।
আমাদের দেশে প্রতিবছর ২০ লাখ শিশু জন্ম গ্রহণ করে। গত বছর ১০ লাখের বেশি মানুষ বিদেশে গেছেন কাজ নিয়ে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছে সাড়ে আট লাখ। জানি, বিদেশে গিয়ে আমাদের অভিবাসীরা অনেক কষ্ট করেন, তারপরও তাঁরাই সব মানুষের সেরা মানুষ, তাঁরাই তো এ দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাচ্ছেন। আর এক হাজার বিসিএস ক্যাডার আর নানা ধরনের সরকারি-বেসরকারি চাকরি করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু তার বাইরে আছে আরেক দল সোনার মানুষ। কৃষিতে, শিল্পে, ব্যবসায়িক উদ্যোগে, তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশে সৃষ্টিশীলতা আর উৎপাদনশীলতার বন্যা বইয়ে দিচ্ছে কোটি কোটি নাম না জানা মানুষ।
এই দেশের মাটি বড়ই উর্বর। এই দেশে ইটের দেয়ালে বীজ পড়লে গাছ হয়, সেই গাছ বড় বড় পাতা মেলে ধরে। এই দেশে ব্যবসায়, বাণিজ্যে, শিল্প-উদ্যোগে, কৃষিতে, আইটিতে, চিকিৎসায়, শিক্ষায় কত–কী যে করার আছে, কত–কী যে মানুষ করছে।
এক ভারতীয় গুরুর বক্তব্য ইউটিউবে পাই; তিনি হাসতে হাসতে বলেছেন, ১. ক্লাসে যারা সবচেয়ে ভালো ফল করে, তারা হয় ডাক্তার–ইঞ্জিনিয়ার। ২. তাদের পরে যারা ভালো করে, তারা হয় সরকারি কর্মকর্তা। কাজেই এক নম্বর গ্রুপ থাকে দুই নম্বরের অধীনে। ৩. এরপর যারা ভালো করে তারা করে ব্যবসা। ১ নম্বর, ২ নম্বর গ্রুপ থাকে ৩ নম্বরের অধীনে। ৪. এরপরের ছাত্ররা আসে রাজনীতিতে। হয় নেতা। ১,২ আর ৩ নম্বর গ্রুপ থাকে ৪ নম্বরের অধীনে। ৫. যারা ফেল করে তারা হয় ডন, গডফাদার। ১,২, ৩,৪ নম্বর গ্রুপ থাকে ৫ নম্বরের অধীনে। ৬. আর এদের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়ার দলে আছে আমার মতো গুরু আর সাঁইজিরা। আমরা সবাইকে উপদেশ দিই। ১, ২, ৩, ৪, ৫—সবাই থাকে আমাদের অধীনে।
Collected Post

Tuesday, November 27, 2018

GP center Project (Offline Project) for novice doctors

দেশে বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষের কাছাকাছি ডাক্তার। এদের সিংহভাগই তরুন চিকিৎসক।\
 এই তরুন চিকিৎসকদের সামনে একসাথে চেপে বসে তিনটি দায়িত্ব-
 ১) চিকিৎসক হওয়ার পর স্বাভাবিক নিয়মেই উপার্জন করে পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া 
২) উচ্চশিক্ষায় রত হওয়া
 ৩) চাকরি/বিসিএসের চেষ্টা করা। 

 এই ত্রিশঙ্কু অবস্থায় আমাদের অধিকাংশ তরুন চিকিৎসক হতাশ হয়ে পড়েন।
 হতাশা থেকে জন্ম নেয় ব্যক্তিগত জীবনে নানা জটিলতা এমনকি তা আত্মহত্যা পর্যন্ত গড়ায়
। ১) সাথে যোগ হয় ক্লিনিক/বেসরকারী হাসপাতালে নামমাত্র বেতনে অপরিসীম পরিশ্রম। 
 ২) সীমিত উচ্চশিক্ষার সুযোগ, পাশে দীর্ঘ সূত্রিতা 
৩) চাকরির অনিশ্চয়তা, অসন্তোস আর উচ্চশিক্ষায় বাধা পড়া


 কিন্তু কোন কি পথ নেই? 
 এত মেধাবী চিকিৎসক, অথচ এভাবে হতাশার জীবন বেঁছে নেবে?
 পথ আছে পথেই- আমরা খুঁজে পাই না।

 কিভাবে? 

 বিভিন্ন গবেষণা বলছে দেশের ৭৫-৮০ ভাগ মানুষ তাদের অসুস্থ্যতার সময় চিকিৎসা নেয় কোয়াকদের কাছ থেকে। এই পরিসংখ্যান শুধু প্রত্যন্ত গ্রামের না এমনকি খোদ ঢাকা শহরেরও। 
 আর এর কারন প্রাকটিসিং ডাক্তারের অভাব। 
এই অভাবকে পুঁজি করে গড়ে উঠেছে কোয়াক আর দালাল চক্রের ব্যবসা, সাথে আছে ভূয়া ডাক্তার! তাহলে এই দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে কি খুব কষ্ট হবে?

 আমাদের প্রথম কাজ হবে নিজেদের প্রাকটিসের উপযোগী করা এবং দেশের সর্বত্র প্রাকটিসিং ডক্টর দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া। 

এতে দুটো লাভ। 
এক মানুষ হাতের কাছে যোগ্য সেবা পেয়ে ভুঁইফোঁড় ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক চক্রের দ্বারা প্রতারিত হয়ে চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা হারাবে না, চিকিৎসক গন ফিরে পাবে পুরনো সম্মান।
 অন্যদিকে 
একজন তরুন চিকিৎসক যেভাবে লাভবান হবেন তা হল- ১) ক্লিনিক নির্ভর হয়ে থাকতে হবে না, ভাল প্রাকটিস জমে গেলে নিজের সুবিধা মত দিনের দিনের একটা সময় প্রাকটিসের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া যাবে। ২) চাকরি হলেও চাকরির পাশাপাশি প্র্যাকটিস স্বচ্ছলতা এনে দেবে আর ৩) যদি অনারারী করে ডিগ্রী করা লাগে তবুও বাকি সময় প্র্যাকটিস করে চলা যাবে। 

 সম্মান পদ বা পদমর্যাদা কিংবা ডিগ্রী থেকে আসে না। সম্মান আসে উপযুক্ত কর্ম থেকে।

 শুভকামনা সবার জন্য

To Learn Details CLICK HERE.

Sunday, November 25, 2018

পত্রিকার পাতায় বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি। বেসরকারী মেডিকেল কলেজগুলো আপনাকে আহবান জানাচ্ছে।

বেসরকারী মেডিকেল কলেজ এর মাঝে বেশ কিছু আছে যে গুলো খুবই ভাল। এবং কোন কোন ক্ষেত্রে নতুন সরকারী মেডিকেল কলেজগুলো থেকেও উন্নত। কিন্তু অনেক বেসরকারী মেডিকেল কলেজই আছে যাদের মান নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। এইসব মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে একজন ভাল চিকিতসক হওয়া কঠিন।
.
.
আমার ব্যাক্তিগত মতামত থেকে কয়েকটি সতকর্তা মেনে চলা উচিত বলে মনে করি। যাতে করে পরবর্তীতে কোন সমস্যার মুখোমুখি ছাত্র ছাত্রীরা বা অভিভাবকরা না হন।
.
.
প্রথমত দেখে নিন, মেডিকেল কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদিত কিনা। যেমন ঢাকার মেডিকেল কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। রাজশাহীর মেডিকেল কলেজগুলো,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে।
.
.
.
এরপরই দেখুন, তাদের একটি চালু হাসপাতাল আছে কিনা। আপনার চকচকে হাসপাতাল দরকার নাই।
 যেই হাসপাতালে রোগী হয় ভাল সেটা আপনার দরকার। আর ভাল কথা, হাসপাতালে গরীব রোগীদের জন্য ফ্রি বেড, ফ্রি অপারেশন এর ব্যাবস্থা আছে কিনা- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন।
কারন ডাক্তারিবিদ্যা একটি প্র‍্যাক্টিক্যাল বিষয়। আবার মনে রাইখেন পাচ দশটা ফ্রি বেড দিয়ে কিছু হবে না। কম করে হলেও পঞ্চাশটি ফ্রি বেড লাগবে। এছাড়া স্বল্প ভাড়ার যথেষ্ট বেড থাকতে হবে। উদাহরনস্বরূপ বলি, ঢাকার একটি বেসরকারী মেডিকেলে ফ্রি বেড মাত্র ত্রিশটা। স্বল্পমূল্যের বেড নাই। তাহলে এই মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা ডাক্তাররা কি শিখবে?
.
.
পর্যাপ্ত শিক্ষক আছেন কিনা দেখুন। বিশেষত রেজিষ্ট্রার, সিএ যারা সরাসরি ছাত্রদের শেখান তাদের যোগ্যতা কি দেখুন। সেটা বিএমডিসির নিয়ম কানুন মানে কিনা জানুন।
.
.
ভর্তির সময়ই সব খরচ সম্পর্কে জেনে নিন। কোন লুকানো খরচ আছে কিনা প্রশ্ন করুন। প্রতি বছর বেতন বাড়ায় কিনা, প্রফেশনাল পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি নেয় কিনা।
.
.
.
জানুন, উক্ত মেডিকেল কলেজ থেকে কয়টি ব্যাচ পাস করেছে। এটা মেডিকেল কলেজ সম্পর্কে ভাল ধারনা দেবে। অনেক ভাল মেডিকেল কলেজ থেকে পনেরটির উপরে ব্যাচ পাস করে বের হয়েছে।
.
.
যেসব মেডিকেল কলেজ কয়েকদিন পরপর শিক্ষক চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়, তাদের বিষয়ে সাবধান।
.
.
.
মনোরম ক্যাম্পাসের ছবি দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। হাসপাতালের রোগী সংখ্যা দেখেন।
.
.
নতুন প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল কলেজ থেকে দূরে থাকাই নিরাপদ। অবকাঠামো খুব ভাল হলে ভিন্ন কথা।
.
.
আর ভুলেও ভর্তি বিজ্ঞপ্তির নিয়মের বাইরে যাবেন না। পরে পস্তাবেন নিশ্চিত।
আর ও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন। উত্তর দেবার চেষ্টা করবো।
শেয়ার করুন। কেউ না কেউ উপকৃত হবে।

লেখক  তানভির আহমেদ

Thursday, August 30, 2018

একটি পাপ ও তার প্রায়শ্চিত্ত (বড় লেখা, যারা ডাক্তার হতে স্বপ্ন দেখেন মাস্ট জানা দরকার )


১.....
পড়ন্ত বিকেল।স্থানঃ অজপাড়াগায়ের এক সরকারী হাসপাতালের ইমার্জেন্সী রুম। আমার চোখের সামনে এক পেট ফোলা রোগী শুয়ে আছে, সাথে জন্ডিসও আছে। ক্লিনিক্যালী রোগীটা Chronic Liver Disease( CLD) এর একটা পেশেন্ট....
চোখ বন্ধ করে CLD এর আন্ডারলায়িং কারণ মনে করার চেষ্টা করলাম।একসময় আঙ্গুল গুণে গুণে ১১ টা কারণ একনাগারে বলতে পারতাম, সেইমুহূর্তে ৮ টার বেশী মনে করতে পারলাম না। অবশ্য তিন বছরেরও অধিক সময় একটানা যখন আমাকে গ্রামে ফেলে রাখা হয় তখন CLD এর ৮ টা আন্ডারলায়িং কারণ যে মনে আছে--সেটাই তো অনেক.....

২....
আমি তখন DMC তে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং করি। গলা ব্যথা নিয়ে এক ইয়াং পেশেন্ট হাসপাতালে আসলে Palatal petechie আর Spleenomegaly পেয়ে ডায়াগনোসিস করেছিলাম-- Infectious mononucleosis. PBF এ আগ্রহ নিয়ে Atypical lymphocyte খুঁজতাম....
স্মৃতিগুলো ছিলো মধুময়, But those days are almost gone now. গলা ব্যথার রোগী এখনও ডিল করি, তবে এখন আর টর্চ দিয়ে মুখ হাঁ করিয়ে Palatal petechie দেখা হয় না, সে সুযোগও এখন পাই না, দেখার উৎসাহও এখন আর কেউ দেয় না.....
একটা একাডেমিক চিকিৎসককে নন-একাডেমিক কোয়াক বানানোতে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা ইউনিয়ন সাবসেন্টারগুলোর জুড়ি নেই। এইসব জায়গাগুলোতে অকাজে উৎসাহ দেবার লোক আছে, আসল কাজের উৎসাহ দেয়ার কেউ নেই....
গ্রামের এই হাসপাতালের আউটডোরের বাইরে জনা ত্রিশেক লোক লাইনে দাঁড়িয়ে তারস্বরে চেঁচাতে থাকে, বোকা এই লোকদের বোঝানো হয়েছে এখানে ফ্রি ওষুধ পাওয়া যায়, রোগ ধরা গুরুত্বপূর্ণ না, ফ্রি ওষুধটাই বড় কথা।ফ্রি ওষুধ পেয়ে এরা আবার হিসেবে বসে যে ফ্রি ওষুধের মূল্য রিকশা ভাড়ার থেকে বেশী হলো কিনা, তবেই না হাসপাতালে আসা স্বার্থক হবে। জ্বর আর গলা ব্যথায় তাই এখন P/C( প্যারাসিটামল) আর H/C( হিস্ট্রাসিন) ই আমার নিত্যসঙ্গী, দুর্বলতা বললে B/C( ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স) তো আছেই....

৩...
আমার কথা বাদ থাকুক, এক ব্রিলিয়ান্ট বড় ভাইয়ের গল্প বলি। জয়েন্ট পেইনের রোগী পেলে যে ভাই Seronegetive নাকি Seropositive সেটা নিয়ে মেতে উঠতো, Spondyloarthropathy ডায়াগনোসিস করার জন্য যে ভাই গ্রামের এই সেটিংএ Oblique view of SI joint এর এক্সরে করে সেই এক্সরের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো--সেই ভাইকে ৬ বছর গ্রামে পড়ে থাকতে থাকতে এখন এসব বাদ দিয়ে জয়েন্ট পেইনের রোগী এলে অ্যানালাইসিস বাদ দিয়ে ধুন্দুমার স্টেরয়েড প্রেসক্রাইব করতে দেখি...
যে ভাইকে আগে Aspiration pneumonia তে Cephalosporin এর সাথে Metronidazole নাকি Clindamycin এর কম্বিনেশন ভালো হবে সেটা নিয়ে কথা কাটাকাটি করতে দেখেছি, সে ভাই এখন গ্রামে বসে দেদারসে যেকোন জ্বরের রোগীকে Ceftriaxone মেরে দেন, কথাবার্তাতেও এখন অনেক পরিবর্তন, ডাক্তার ডাক্তার ভাব বাদ দিয়ে কেমন যেন এখন একটা গ্রাম্য নেতার ভাবসাবও চলে এসেছে।ভাই এখন কতটুকু করাপটেড, সেটা আর নাই বা বলি, উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন পড়ে থাকবেন আর করাপটেড হবেন না-সেটা আনইউজুয়াল.....

৪....
এবার একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কয়েকটা কথা বলি। উপজেলা লেভেল ও ইউনিয়ন সাবসেন্টারগুলো চিকিৎসকদের জন্য সম্পূর্ণভাবে অরক্ষিত একটি জায়গা। অশিক্ষিত ও অপশিক্ষিত লোকদের যদি আপনি সমঝে চলতে না পারেন তবে আপনার কপালে খারাপী আছে, মোরালিটি এখানে তিলে তিলে নষ্ট হবে।এহেন জায়গায় একটানা ২ বছর কষ্টকর, একটানা ৪ বছর অনেকটা অসম্ভব....
লজিস্টিক সাপোর্টের কথা আর নাই বা বলি। নলেজ আছে কিন্তু প্রয়োগ করতে পারছেন না -এর চেয়ে হতাশাজনক আর কিছু কি হতে পারে? আমার এক কার্ডিওলজিস্ট বন্ধু তো ৩৩ তম বিসিএস আর কন্টিনিউই করলো না তার পোস্টিং প্লেস এ লজিস্টিক সাপোর্ট না পেয়ে...

৫....
আমার বক্তব্য কি আপনাদের কাছে পরিস্কার হয়েছে? আপনারা কি বুঝতে পারছেন যে প্রতিটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো নবীন, কর্মোদ্যম চিকিৎসকদের জন্য একেকটা #Death_Trap?আপনারা কি জানেন যে -কোন চিকিৎসক তার জীবনের দীর্ঘ সময় উপজেলা লেভেলে থাকলে তার চিকিৎসক জীবনের মানসিক মৃত্যু ঘটে?
কথাগুলো কেন বললাম? যারা জানেন না তাদের জন্য বলিঃ বিসিএসে (স্বাস্থ্যে) নতুন নিয়ম তৈরি করা হয়েছে যে প্রতিটি চিকিৎসককে তার স্বর্ণালী জীবনের প্রথম ৪ টি বছর গ্রামে থেকে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আগের বাধ্যবাধকতা ছিলো ২ বছরের....

৬....
এবার একটা ছোট ক্যালকুলেশনে আসেন। ইন্টার্নীসহ MBBS কমপ্লিট করতে করতে যদি বয়স হয় ২৪, তারপরে বিসিএসের নিয়োগ ঝামেলা আরো ন্যূনতম ২ বছর, প্লাস গ্রামে চিকিৎসা সেবা ৪ বছর।অলরেডী কিন্তু ৩০ বছর গত হয়েছে। ট্রেনিং পোস্ট কিন্তু হাতের মোয়া না, আরো ১ বছর ধরলাম। তারপর ট্রেনিং প্লাস কোর্স পিরিয়ডের ঝক্কিতে আরো ৪ থেকে ৫ বছর। এবার বলুন পোস্টগ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে করতে বয়স কত হবে?
এদেশে চিকিৎসক হওয়াটা কি পাপ? আমাদেরকে কি এখন তার জন্য একটার পর একটা প্রায়শ্চিত্ত করে যেতে হবে?
প্রতিবার একেকটা সমস্যা হয় আর চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ সমস্যা সমাধানে তৎপর হন। ডেপুটেশন সংক্রান্ত একটা সমস্যা হলো, তখনও একই ঘটনা দেখা গেলো, এবারো নিশ্চয়ই সেটাই হবে। সমস্যা তৈরি হবার পূর্বেই আপনারা অ্যাকশনে যান না কেন? আপনাদের সাথে পরামর্শ ছাড়া এসব ডিসিশন কিভাবে পাশ হয়?
একটা তুর্কি প্রবাদ বলি।" জঙ্গল ছোট হয়ে আসছিলো, তারপরও গাছেরা কুঠারকে ভোট দিচ্ছিলো। কারণ, কুঠারের হাতল কাঠের তৈরি আর গাছেরা ভেবেছিলো কুঠার বুঝি তাদেরই একজন..."
প্রিয় নেতৃবৃন্দ, জঙ্গল বেশী ছোট হবার পূর্বেই ব্যবস্থা নিন....
প্রমোশনের পথ রুদ্ধ হচ্ছে, দেশের কারেন্সীগুলো কিন্তু দেশের বাইরে চলে যাবে। এর ফলাফল আমার বা আপনার কারো জন্যই কিন্তু সুখকর কিছু হবে না.....

৭....
আমি কি এদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণের চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করছি? ব্যাপারটা কিন্তু তা না। আমি প্রান্তিক পর্যায়ে ৪ বছর চিকিৎসা সেবার পক্ষপাতী, তবে সেটা হতে হবে মেধাকে ধ্বংস না করে। ৪ বছর গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা সেবা দেয়াটা হতে হবে প্ল্যানড্ এন্ড সিস্টেমেটিক....
৪ বছর একটানা গ্রামে চিকিৎসা না দিয়ে ২ বছর আগের মত গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক। প্রশিক্ষণ শেষে আবার ২ বছর গ্রামে সেবা দিতে হবে। এতে করে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন করার বাধাও থাকলো না আবার পরবর্তী ২ বছরে গ্রামের মানুষগুলো অনেকটা কনসালট্যান্ট পর্যায়ের সেবা পাবে, বিষয় কিন্তু একই, অথচ এই সিদ্ধান্তটা নিঃসন্দেহে অনেক পরিপক্ক....
আচ্ছা, যারা এরকম উদ্ভট ডিসিশনগুলো নেন, তারা কি একবারও কারো সাথে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন? যদি করে থাকেন তবে এধরণের ডিসিশনগুলো কিভাবে আসে? আসলে ডিসিশনগুলো উদ্ভট নাকি আমার চিন্তাধারাই উদ্ভট? থমাস গ্রে অবশ্য বলেছিলেন--" Where ignorance is bliss, it's folly to be wise..." বোকার রাজ্যে ভালো কিছু চিন্তা করা তো উদ্ভট বিষয়ই হবে....

৮....
ফিজিক্সের Second Law of Thermodynamics কে বিশ্লেষণ করলে আমরা এনট্রপির ধারণা পাই। এনট্রপি মূলত বিশৃঙ্খলতার পরিমাপক। মহাবিশ্বে এনট্রপি বাড়ছে, এর অর্থ- মহাবিশ্ব চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দিনের পর দিন যেভাবে সুচারুভাবে এদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষার পথকে রুদ্ধ করা হচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে এনট্রপি বৃদ্ধি শুধুমাত্র ফিজিক্সের টপিক না, একই কনসেপ্ট এদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানেও খাটে....
মেডিকেল সিস্টেমে এনট্রপির এই বৃদ্ধি বা বিশৃঙ্খলতা কিন্তু একটি অশনিসংকেত। অসংখ্য চিকিৎসক উচ্চশিক্ষার পথ থেকে সরে যাবে। এটি কি একটি দেশের জন্য মঙ্গলময় কিছু? চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষার পথকে কণ্টকাকীর্ণ করে একটার পর একটা যে আদেশগুলো তৈরি হচ্ছে তা একসময় আমাদের দেশের জনগণের জন্যই ব্যাকফায়ার হিসেবে কাজ করবে। সত্যিকার অর্থে যারা দেশমাতৃকাকে তার নিজের অন্তরে ধারণ করেন, তারা কিভাবে এমন আদেশ জারী করেন?

যেকোন দেশ যখন তাদের মেধাবী প্রজন্মকে সময়ের সাথে সাথে আরো শাণিত করে সেখানে আমরা এদেশে এই চিকিৎসক শ্রেণীটিকে একটার পর একটা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে দিনের পর দিন গলা টিপে হত্যা করছি।
আচ্ছা, আমরা এমন কেন? আমরা কেন সবসময় অন্যের উন্নতিতে বাঁধার সৃষ্টি করি? অন্যের উন্নতিতে বাঁধা দেয়া যে নিজের দেশের উন্নতিতে বাঁধা দেয়া-এটা কেন আমরা বুঝতে চাই না? আমরা কেন আমাদের পরিবর্তন করতে পারি না?....

লিখেছেন ashaduz zaman kanak

Friday, August 17, 2018

মায়ের চিকিৎসার টাকা মা দিবে, আমারে বলেন কেন?!!


মনটা কদিন ধরেই ভালো নেই।
অবশ্য যে অদ্ভুত দেশে বসবাস করি সেদেশে মনমেজাজ একটানা ভালো থাকবে সেটাও অস্বাভাবিক। মন খারাপ হলে আপনারা কে কি করেন সেটা জানি না, তবে আমি কি করি-সেটা বলতে পারি। প্রথমেই মোবাইলটা অফ করি, মাঝে মাঝে রমনা পার্কের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে বসে থাকি, কিছু বাদাম ছড়িয়ে দিলে দুয়েকটা কাঠবিড়ালী চলে আসে, এরা কি আশ্চর্য সুন্দরকরে বাদামগুলো দুহাতে ধরে নিয়ে খায়! এদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে মনটা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসে।



মন খারাপের ব্যক্তিগত নানা ঘটনা বাদ থাকুক, চিকিৎসক হিসেবে যে কারণে মন খারাপ -সে ঘটনাটা বলি...


সেই দিনটার কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। সকাল সকাল এক যুবক সাথে করে এক বয়স্ক মহিলা ও এক তরুণীকে নিয়ে আমার চেম্বারে প্রবেশ করলেন। বয়স্ক মহিলাটি হাই-প্রেশারের রোগী, বিষয়টা নিয়ে যুবক ও তরুণী বেশ উদ্বিগ্ন। প্রেশার চেক করলাম, একটু বাড়তির দিকে। বয়স্ক মহিলাটি প্রেশারের ওষুধ খাচ্ছেন, ডোজটা বাড়িয়ে দিয়ে কি করতে হবে আর কি করা যাবে না সে ব্যাপারে কিছু কথা বলে রোগীটি দেখা শেষ করলাম। যুবকটি আমার প্রতিটা কথা বেশ দায়িত্ব নিয়ে বুঝে নিলেন, আমার সামনেই বেশ তরল গলায় বয়স্ক মহিলাকে কয়েকবার "মা, মা" ডেকে তাকেও বুঝিয়ে দিলেন। তাদের কথোপকথনে বুঝতে পারলাম বয়স্ক মহিলাটি তার শাশুড়ি, তরুণীটি তার স্ত্রী।

যুবকের রেসপনসিবিলিটিতে আমিও তখন বেশ মুগ্ধ, এমনকি মহিলার সামনেই বলে ফেললাম, 'আপনার ভাগ্য তো বেশ ভালো! এমন জামাই কি সবার ভাগ্যে জোটে?'
মহিলা ও তরুণী হাসিমাখা মুখে সেটা স্বীকারও করে নিলেন।

যুবকটি ভিজিট দিয়ে বের হয়ে যাবার সময় আমাকে জানালেন ঘন্টাখানেক পর যুবকটির মা'ও আসবেন, আমি যেন একটু দেখে দেই...
যুবকটির মায়ের কথা রোগী দেখতে দেখতে ভুলে গেলাম। চেম্বার শেষ করে উঠতে যাবো, এমন সময় এক বৃদ্ধ মহিলা রুমের দরজা ও দেয়াল ধরে ধরে আমার রুমে ঢোকার চেষ্টা করলেন। আমার মনে আছে ঐ বৃদ্ধা বেশ দুর্বল ছিলেন, উনাকে চেয়ারে বসানোর জন্য আমাকে উঠে যেতে হয়েছিলো।

 এই বৃদ্ধা আসলে ঐ যুবকটির মা। ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, শ্বাসকষ্ট আগে থেকেই ছিলো, ইদানিং পায়ে পানি চলে আসছে, সে কারণেই ডাক্তারের কাছে আসা। অনিয়মিতভাবে চিকিৎসা নিতেন। প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লিখে কিডনী সংক্রান্ত দু'তিনটা পরীক্ষা দিতে হলো। ভিজিট দেবার সময় উনি একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন, অবাক হয়ে বলেছিলেনঃ " আমার বাজান কি টাকা দিয়া যায় নাই!"
আমাকে বলতে হয়েছিলোঃ " আপনার ছেলের মনে হয় ভুল হয়েছে। সমস্যা নেই, পরেরবার আসলে আপনার ছেলে থেকে নিয়ে নিব..."
তবে ছেলে যে ভুল করেনি সেটা পরে বুঝতে পেরেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম ছেলের ভিজিট না দেয়াটা ছিল ইচ্ছাকৃত...

মাসদুয়েক পর যুবক আবারও এসেছিলেন তার শাশুড়িকে নিয়ে, আগের মতই শাশুড়ির চিকিৎসা নিয়ে তিনি ছিলেন বেশ উদ্বিগ্ন। চলে যাবার সময় একান্তে ডেকে তার মায়ের ভিজিটের কথা বললাম।
 উনি উষ্মার স্বরে যে উত্তর দিয়েছিলেন সেটা আপনাদের শোনাইঃ "মায়ের চিকিৎসার টাকা মা দিবে, আমারে বলেন কেন?"
অপেক্ষাকৃতভাবে সুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে স্ত্রী সমেত যুবকটি হাজির হতে পারলেও ছানি পড়া অধিকতর দুর্বল নিজের জন্মদাত্রীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসার সময় যুবকটির হয় নি। শাশুড়ির ক্ষেত্রে ভিজিট দিতে যুবকটি কার্পণ্য করেনি, কৃপণতা তিনি দেখিয়েছেন তার জন্মদাত্রীর প্রতি...

বৃদ্ধা মহিলা পরবর্তীতে আরো দু'বার সম্পূর্ণ একা একাই আমার কাছে এসেছিলেন, একা না এসে উপায়ও নেই, স্বামী মারা গিয়েছে অনেকদিন আগে। ততদিনে পায়ের ফোলা আরো বেড়েছে, তেমন কোন ওষুধও নেন নি, পরীক্ষাগুলোও করান নি। কেন ওষুধ ঠিকমত নেন না জিজ্ঞেস করাতে বলেছিলেনঃ" বাজান তো ওষুধ কিন্যা দেয় না। ওর কি দোষ কন! বউ-বাচ্চা নিয়া কত খরচের সংসার!"

বৃদ্ধা এর পরে যে দু'বার এসেছিলেন সে দু'বারই সর্বমোট ২০০-৩০০ টাকা হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছিলেন, আমার ভিজিটটাও দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, "বাজান" কে হয়ত ভিজিট সংক্রান্ত ব্যাপারে ডাক্তারের সামনে আর অপমানিত হতে দিতে চান নি। আমার সাথে বৃদ্ধার আর দেখা হয় নাই...

এসব ঘটনার পর সাত-আট মাস পার হয়েছে। গত শুক্রবার ঐ যুবক আবারো তার শাশুড়ি আর স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন। শাশুড়ি সংক্রান্ত ব্যাপারে উনার তৈলাক্ত ভাব আরো বেড়েছে। প্রেসক্রিপশন লেখা শেষে কৌতুহল বশত একবার জিজ্ঞেস করলাম: 'আপনার মা কেমন আছেন?' উনি আনন্দিত চেহারা নিয়ে বললেন (I repeat, উনি আনন্দিত চেহারা নিয়েই কথাটা বলেছিলেন): "মা তো মারা গেছে আরো মাস চারেক আগে! মারা গিয়া অবশ্য ভালোই হইছে, তার জন্যে সবার অনেক কষ্ট হইতেছিলো"


আমার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো, ক্ষণিকের জন্য থমকে গেলাম।
 আহারে! যে মা তাকে "বাজান" ছাড়া কখনও সম্বোধন করেন নাই, সেই "বাজানে"র কথাটা কি ঐ মা পরপার থেকে শুনতে পেয়েছেন? ঐ মা কি শুনতে পেয়েছেন যে মৃত্যুর আগমুহূর্তে তার জন্য নাকি সবার কষ্ট হচ্ছিলো? "বাজান"-কে কষ্ট থেকে মুক্ত করতেই কি তিনি তাড়াতাড়ি ওপারে চলে গেলেন? আমার চিন্তার রাজ্য কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেলো। প্রেসক্রিপশন নিয়ে বৃদ্ধার ছেলে হাসিমুখে তার শাশুড়িকে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। মনে অনেক কথা ছিলো, মুখে কিছু বলতে পারলাম না। ক্লান্ত পথিকের মত ঝিম মেরে তাদের গমন পথের দিকে চেয়ে রইলাম, পথিক শুধু দেখে যায়, কিছু বলা তার শোভা পায় না...

চিকিৎসক হিসেবে সবচেয়ে কঠিন কাজ কি জানেন? মানুষের সাথে সাথে মানুষরূপী কিছু অমানুষের চিকিৎসাও আমাদের করতে হয়। সে বড় কঠিন কাজ! চিকিৎসকদের আপনারা পশু বলেন, অমানুষ বলেন--তাতে এখন খুব একটা কষ্ট পাই না, আপনারা মানুষ থাকলেই আমরা অনেক খুশি। দিনের পর দিন শত-সহস্র সত্যিকার "মানুষ"দের চিকিৎসা দিতে আমরা চিকিৎসকরা কিন্তু ক্লান্ত হই না, "মানুষরূপী অমানুষ"দের চিকিৎসা দিতে আমাদের যে বড্ড কষ্ট হয়...
লিখেছেন ঃডাঃ জামান অ্যালেক্স

Friday, April 27, 2018

চলমান দোদুল্য বাস্তবতা/সংঘাত এড়াতে “প্লীজ”-সমগ্র:

(সকল ধরনের চিকিৎসকদের প্রতি)

যদি বাঁচতে চান মর্যাদার সাথে:

১.রোগী দেখা,রিপোর্ট বিশ্লেষন,ওষুধ লেখা,উপদেশসহ চেম্বারে পরপর ৩-৫দিন বারবার কোন ভিজিট রাখবেননা প্লীজ।দরকার হলে সম্ভাব্য সকল হিসেব একত্র করে মন&পারিপার্শ্বিকোপযোগী বেশি ভিজিট নির্ধারণ করুন।(ভাল প্রতিস্ঠানে বিক্রয়পরবর্তি সেবা বলতে একটি টার্ম আছে,নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিস্ঠান ভাবুন প্লীজ

২.প্রথম ২-৩মিনিট রোগী আগড়বাগড় যাই বলুক বলতে দিন,থামাবেননা প্লীজ।কোনটা কেন কি দিচ্ছেন একটুসখানি হলেও বুঝিয়ে দিন।
টাকা বেশি নিন কিন্তু ব্যাবহার মধুরতম করুন প্লীজ।

৩.ডাক্তার নিজে,বাবামা,স্পাউস,সন্তানের থেকে হাফ/ফুল ফ্রি(ভিজিট দিতে নিলে ঝারি লাগালে বেস্ট) ভিজিট রাখুন প্লীজ।

৪.ডাক্তারদের ইনহাউস কোন ভুল হলে সিনিয়ারগন ননডাক্তার কারো সামনে ভুলেও কিছু বইলেননা প্লীজ,বরং তাকে সাপোর্ট করুন;রুম বন্ধ করে দরকার হলে থাপ্পর মাইরেন।দেখবেন একই ভুলতো দ্বিতীয়বার করবেইনা বরং আপনি দখল করবেন পিতার স্থান।
জুনিয়ারোর সকল রোগীই আপনার কাছেই রেফার্ড হবেন,একটু করেই দেখেননা প্লীজ

৫.এমবিবিএস কারো ব্যাবস্থাপত্র আপনাকে উপস্থাপন করা হলে ছিছি না করে অভিনয় করে হলেও একটু প্রশংসা করুন প্লীজ।রোগী ফিরে গিয়ে তাকে যখন শ্রুত প্রশংসাবানী শোনাবেন,জুনিয়ারও মহানিশ্চিন্তে খালি আপনাকেই রোগী পাঠাতে থাকবেন।ব্যাবস্থাপত্রে ভুল থাকলে জুনিয়ারের নাম্বার নিয়ে কৌশলে বুঝিয়ে দিন।কি কাজ হয় দেখুন।রোগী রোগী পাঠায় ১/২জন,ডাক্তার রোগী পাঠায় শয়ে শয়ে।তাছাড়া আপনার এই শিক্ষা ভবিষ্যতে সংক্রমিত হয়ে উত্তম চিকিৎসকের বংশবৃদ্বিই করবে।অব্যার্থ সূত্র,এপ্লাই করেই দেখুন প্লীজ।

\
ংশেষকথা-
ডাক্তারি ওকালতিকে ব্যাবসা সংজ্ঞায়িত করেছিলেন রবিঠাকুর।ব্যাবসা দুরকম হয়,ক্ষনস্থায়ী,দীর্ঘস্থায়ী।
পেশাকে মর্যাদাসম্পন্ন করুন।আজকের নবীন চিকিৎসকের কিন্তু কসাই অভীধা প্রাপ্য নয়,অর্জনও নয়।
উটপাখীর মত আর কতকাল মুখা লুকাবেন !

রোগী শারীরিক মানসিক কস্টে আছেন,অনেক প্রতীক্ষা করে দূর থেকে সিরিয়াল নিয়ে বসে আছেন,যাতায়াতের কস্ট,ফিরে যাবার কস্ট,তারপর আবার সম্মানের সাথে আপনাকে টাকাও দিচ্ছেন,এতকিছুর পর আপনার কি মনে হয় অন্তত রোগীর সাথে যেকোন যুক্তিতেই খারাপ আচরনের অধিকার আপনার আছে?

যদি মনে করেন নিজের টেম্পার ধরে রাখতে পারছেননা,উপরের পরামর্শগুলো মানতে,অন্তত ১০-১৫টা মিনিট রোগীকে দিতেই পারছেননা তাহলে সেদিন চেম্বার বন্ধ রাখুন।
সবাই যদি নিজের কর্তব্য নিয়ে ভাবতো তাহলে অধিকার/হক শব্দটি বিলুপ্ত হয়ে যেত।

বি:দ্র: ডাক্তারদের জন্য লেখা পোস্ট,গালি থাকবেনা তা কি হয় বলেন?
Waiting Fr 1st Gaalis
#SrModerator

Monday, April 16, 2018

Pre-marital Screening test: (একটি সচেতনতা মূলক পোস্ট)

Admin · 
 collected post
(একটি সচেতনতা মূলক পোস্ট)



বিয়ের আগেই সম্ভাব্য কাপল (Couple)-এর অর্থাৎ ছেলে (বর) এবং মেয়ে (কণে) উভয়ের কিছু নির্দিষ্ট ডাক্তারী বা মেডিক্যাল ইনভেস্টিগেশনস্ (পরীক্ষা সমূহ) করা উচিত।
বহিঃবিশ্বে এটা নিয়মিত ভাবে (রুটিনলি) প্রাকটিস হয়ে থাকে।
যাকে বাহিরের দেশে Pre-marital Screening test বলা হয়।

টেস্ট গুলো হলোঃ
I) Blood grouping with Rh-typing.
ii) Sickling test.
iii) HIV screening test.
iv) HBsAg.
v) Anti HCV.
vi) VDRL (Syphilis) (RPR)
Gonorrhea (Neisseria Gonorrhea) detection by PCR
vii) HbA1c

এই টেস্ট করার পর যদি কারো এমন কোনো সমস্যা ধরা পড়ে যেটা ভবিষ্যতে বাচ্চাকেও Affect বা আক্রান্ত করার সম্ভাবনা থাকে সে ক্ষেত্র উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সে বিষয়ে অবহিত করা হয়।
বিশেষত রক্তের সম্পর্কীয় আত্মীয়ের (Consanguineous marriage) মাঝে বিয়ের ক্ষেত্রে এর সম্ভাবনা বেশী থাকে। যেমন: Sickle cell anaemia. Thalasaemia ইত্যাদি।

তাই এই টেস্ট গুলো করলে অনেক ক্ষেত্রেই বেশ কিছু বংশগতভাবে ট্রান্সমিটেড ডিজিজ এভয়েড করা অনেকাংশে সম্ভব.

Monday, January 15, 2018

সুপ্রিয় অভিভাবক, আগে ভিডিওটি দেখুন। তারপর দু'মিনিট ভাবুন।

 

আপনার সন্তানকে চিকিৎসক বানানো কি খুবই জরুরী ?

একবারও কি ভেবেছেন সন্তানকে চিকিৎসক বানাতে গিয়ে মানহীন প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে সন্তানের জন্য কি সর্বনাশ ডেকে আনছেন ?
 
মানহীন মেডিকেল কলেজগুলো মানহীন চিকিৎসক বানিয়ে শুধু আপনার সন্তানের ভবিষ্যতই নষ্ট করছে না তারা দেশের ভবিষ্যতও নষ্ট করছে।

এইসব মানহীন মেডিকেল কলেজগুলোর মালিক ও পরিচালনা পর্ষদ আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে কখনও ভাবে না তারা শুধু তাদের ব্যাবসা নিয়েই চিন্তিত।

তারা আপনাকে বিভিন্ন প্যাঁচে ফেলে আপনার কাছ থেকে ফিবছর শুধু নিয়েই যাবে দেবে না কিছু।
আপনাকে নিঃস্ব করে ছাড়বে।

তাদের এই অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আপনার কলিজার টুকরা সন্তানকে দিনেদুপুরে গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দিতেও পিছুপা হবে না।

আর একবার ভেবে দেখুন।

যদি সরকারি মেডিকেলে অথবা মানসম্মত কোন প্রাইভেট মেডিকেলে(হাতেগোনা কয়েকটা) আপনার সন্তান চান্স পায় তবেই শুধু এ পথে আগাতে পারেন।
 নতুবা বিকল্প চিন্তা করুন।

দেশে পড়ার মতো ও যোগ্য মানুষ হওয়ার মতো আরো অনেক ভালো ভালো বিষয় আছে।
সেদিকে ঝুকুন।
সন্তানের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।
জাতিও রক্ষা পাবে।

আপনারা আপনাদের সন্তানদের এইসব মানহীন ভূইফোড় মেডিকেলে ভর্তি না করালে ছাত্রের অভাবে ব্যাবসা গুটিয়ে তারা রাস্তায় বাদাম বেঁচবে।

আমরা সবাই মিলে তখন তাদের কাছে বাদাম খেতে যাবো।
সেই বাদাম খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে শেষ করছি।

বিনীত নিবেদক-
একজন চিকিৎসক।
 >> কালেক্টেড পোস্ট <<<

Wednesday, January 3, 2018

চলেন বিদেশ যাই!

বলছিনা..
আমরা বেশি ভাল...এও বলছিনা ওরা খারাপ..শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই..চিকিৎসা দিতে গেলে কিছু জটিলতা হতেই পারে...সেটা এপারে হোক বা ওপারে হোক!

আজ চেম্বারে আসা প্রথম ৩ জনের মধ্যে ২ জনই ইন্ডিয়া ফেরত!

প্রথমজন-

উনি রক্তনালীর টিউমার নিয়ে ইন্ডিয়া গিয়েছিলেন...তারা ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন...ইঞ্জেকশন দেয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আংগুল গুলো এভাবে পঁচে যায়!!
(ফেসবুকে আপলোডযোগ্য করার জন্য ছবির অরিজিনাল কোয়ালিটি একটু চেঞ্জ করা হল...তবুও কারো অস্বস্তি লাগলে দু:খ প্রকাশ করছি)

আরেকজন--

২০১০ সালে ইন্ডিয়াতে ভ্যারিকোস ভেইনের লেজার করান...আবারো ভ্যারিকোস ভেইন হয়েছে...ডুপ্লেক্স করে লেজারের নাম মাত্র খুঁজে পেলাম না!

ফলাফল -

আবারো অপারেশন করতে হচ্ছে তাকে!
যাওয়ার আগে..দুই রোগীর প্রায় একই প্রশ্ন, 'স্যার, আমার কি ওখানে ভুল চিকিৎসা হয়েছে?'
না..উত্তরে ওদের বদনাম করিনি! ও আমার স্বভাবে নেই! ইথিকসেও নেই!
বললাম, 'না তো...এমন সমস্যা হতেই পারে! আমদেরও হয়!'
রোগীর মুখে তখন অসহায়ত্ব,
'হ স্যার, আমার ভাগ্যটাই খারাপ'
---------- ----------
প্রিয় সাংবাদিক ভাই,
এ সপ্তাহেই প্রথম রোগীর আঙুলসহ পায়ের কিছু অংশ কেটে...তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করব আমরা!
হবে নাকি একটা রিপোর্ট?
ধুর...বাদ দেন...
চলেন বিদেশ যাই!
L