যে
দিনটায় ভিকারুন্নিসার শিক্ষিকা গ্রেপ্তার হলেন সেই দিনটা বাংলাদেশের
শিক্ষাব্যবস্থার জন্য খুব একটা কষ্টের দিন। এই দিনের আগের বাংলাদেশ, আর এই
দিনের পরের বাংলাদেশ এক হবেনা। বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের কাছে খুব ভয়ের একটা মেসেজ গেলো যে নকল ধরলে এমন পরিণতিও হতে পারে।
এইযে ডাক্তার পেটানো শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশে, এতে একটা ক্ষতি হয়েছিলো
আপনারা নিজেরা টেরও পান নাই। এখন গ্রামের দিকের ডাক্তারেরা একটু
ক্রিটিক্যাল ইমার্জেন্সী রোগী হলেই তাদের শহরে রেফার করে পাঠিয়ে দেন, কোন
ঝুঁকি নেন না নিজেরা চিকিৎসা করার। কারন রোগীর কিছু একটা হয়ে গেলে পরে
মানুষ ডাক্তারের উপর চড়াও হবে। একজন রোগীকে সদরে রেফার করে দেয়ার অধিকার
ডাক্তারদের আছে। এতে করে দেখা যায় অনেক রোগীর হয়তো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে
উপকার হতো, কিন্তু শহরে যেতে যেতে রোগীটা সেই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়,
অনেক সময় মারাও যায়।
এই গ্রেপ্তার বাংলাদেশের শিক্ষকদেরও তেমনই একটা মেসেজ দিলো। নকল টকল ধরলে তাদের জেলে যেতে হবে, কি দরকার তাহলে ঝামেলা করার! কেউ চুপে চুপে নকল করলে তো তার কোনকিছু আসে যায়না। সবার আগে নিজের জীবন বাঁচানো ফরজ। এইযে ভিকারুন্নিসার তিন শিক্ষিকা ফেঁসে গেলেন, তারা যদি মেয়েটার হাতে ফোন দেখেও কিছু না বলে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতেন তাহলে কি তাদের আর এই বিপদে পড়তে হতো? কেউ তাদের ফাঁসি আর দশ বছরের কারাদন্ড দাবি করতো?
শিক্ষকেরা পরিস্থিতি ওয়াচ করছেন। এক প্রকার ধরেই নেয়া যায় শিক্ষকেরাও ডাক্তারদের মতোই নিরব বিপ্লবের দিকেই আগাবেন। যাদের কাজ জাতির মেরুদন্ড সোজা করা তাদের নিজেদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার জন্য ছাত্রদের এত তৎপরতা দেখে যদি তাদের ক্ষোভ জন্মে তাতে কি তাদের খুব একটা দোষ দেয়া যায়? তখন যদি ছাত্রদের মেরুদন্ড গড়ার বদলে যদি শিক্ষকেরা ছাত্রদের ভেতর ঘুণপোকা ঢোকানোর আয়োজন করেন তাহলে কিছু কি করার আছে? ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকেরা যে রকম প্রতিহিংসা দেখাচ্ছেন শিক্ষকদের প্রতি, তার একশো ভাগের একভাগও শিক্ষকেরা নিরবে দেখানো শুরু করেন দশ পনেরো বছর পর একটা জাতিকে হারিকেন দিয়েও আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
এবং তা ই ঘটতে যাচ্ছে আসলে। সামনে হয়তো টিচাররা নকল করতে দেখলেও না দেখার ভান করবেন, পড়া শিখে আসলো বা না আসলো কিছুই বলবেন না ছাত্র যদি মনে কষ্ট পায় তা ভেবে, হয়তো অভিভাবককেও আর পারতপক্ষে ডাকবেন না। কিসের এত ঠেকা তাদের, বেশী আদর্শ দেখাতে গেলে কি হয় তা তো তারা অলরেডি জেনেছেন! আপনারা যে তাদের টাকা দিয়ে রাখা কাজের লোকের মত করে বিবেচনা করছেন, তারাও হয়তো তখন ছাত্রছাত্রীদের কাস্টোমার হিসেবেই বিবেচনা করবেন। সেধে এখন যেটুকু এফোর্ট দেন তখন হয়তো তা আর দিবেন না। তাদের কাজ ক্লাশ নেয়া পরীক্ষা নেয়া, তারা তা নিবেন, কেউ পড়ে আসলো কি না কিংবা নকল করে পরীক্ষা দিলো কিনা তা আর কেয়ার করবেন না। শিক্ষাব্যবস্থায় এসবের ফলাফল কি হবে আপনারা নিজেরাই বুঝুন!
এই গ্রেপ্তারের দিনটা ছাত্র ছাত্রীদের মনোভাবও পালটে দিবে। তারা আর শিক্ষকদের পাত্তাও দিবেনা। তারা জানবে দুই পয়সার কাজের লোকের মত শিক্ষককেও চাইলেই ছাঁটাই করে দেয়া যায়, জেলে পুরে দেয়া যায়। এবং এতে ডিজিটাল নকলসহ সব ধরনের নকলই উৎসাহিত হবে। কারন বাংলাদেশের জনগণ রায় দিয়েছে নকলের শাস্তি হওয়া উচিত মাথায় হাত বুলিয়ে বলা- বাবু আর এমন করো না! তারা জানবে সেটাই সঠিক, সেটাই তাদের অধিকার। আগে শিক্ষকেরা পরীক্ষার হলে গার্ড দিতেন, আর এখন থেকে বেঞ্চে বেঞ্চে গিয়ে শুধু সবাইকে বলবেন বাবুসোনা এমন করেনা! সামনের বেঞ্চ থেকে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে পেছনের বেঞ্চে যাবেন, পেছনের বেঞ্চে যেতে যেতে দেখবেন সামনের ছাত্রছাত্রীরা আবার অন্য পকেট থেকে নকল বের করে লেখা শুরু করেছে। জিনিসটা একটু ফানি শোনাচ্ছে, কিন্তু প্রিটিমাচ বিষয়টা ঠিক এই রকম যদি না ও হয় এর কাছাকাছি কিছুই হবে!
অনেক তো বিপ্লব করলেন। অনেক মানবতার বাণী শোনালেন। এখন এই নতুন বাংলাদেশকে গ্রহণ করার জন্য আপনারা প্রস্তুতি নেন...
©Shuvo Kamal
এই গ্রেপ্তার বাংলাদেশের শিক্ষকদেরও তেমনই একটা মেসেজ দিলো। নকল টকল ধরলে তাদের জেলে যেতে হবে, কি দরকার তাহলে ঝামেলা করার! কেউ চুপে চুপে নকল করলে তো তার কোনকিছু আসে যায়না। সবার আগে নিজের জীবন বাঁচানো ফরজ। এইযে ভিকারুন্নিসার তিন শিক্ষিকা ফেঁসে গেলেন, তারা যদি মেয়েটার হাতে ফোন দেখেও কিছু না বলে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকতেন তাহলে কি তাদের আর এই বিপদে পড়তে হতো? কেউ তাদের ফাঁসি আর দশ বছরের কারাদন্ড দাবি করতো?
শিক্ষকেরা পরিস্থিতি ওয়াচ করছেন। এক প্রকার ধরেই নেয়া যায় শিক্ষকেরাও ডাক্তারদের মতোই নিরব বিপ্লবের দিকেই আগাবেন। যাদের কাজ জাতির মেরুদন্ড সোজা করা তাদের নিজেদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়ার জন্য ছাত্রদের এত তৎপরতা দেখে যদি তাদের ক্ষোভ জন্মে তাতে কি তাদের খুব একটা দোষ দেয়া যায়? তখন যদি ছাত্রদের মেরুদন্ড গড়ার বদলে যদি শিক্ষকেরা ছাত্রদের ভেতর ঘুণপোকা ঢোকানোর আয়োজন করেন তাহলে কিছু কি করার আছে? ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকেরা যে রকম প্রতিহিংসা দেখাচ্ছেন শিক্ষকদের প্রতি, তার একশো ভাগের একভাগও শিক্ষকেরা নিরবে দেখানো শুরু করেন দশ পনেরো বছর পর একটা জাতিকে হারিকেন দিয়েও আর খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
এবং তা ই ঘটতে যাচ্ছে আসলে। সামনে হয়তো টিচাররা নকল করতে দেখলেও না দেখার ভান করবেন, পড়া শিখে আসলো বা না আসলো কিছুই বলবেন না ছাত্র যদি মনে কষ্ট পায় তা ভেবে, হয়তো অভিভাবককেও আর পারতপক্ষে ডাকবেন না। কিসের এত ঠেকা তাদের, বেশী আদর্শ দেখাতে গেলে কি হয় তা তো তারা অলরেডি জেনেছেন! আপনারা যে তাদের টাকা দিয়ে রাখা কাজের লোকের মত করে বিবেচনা করছেন, তারাও হয়তো তখন ছাত্রছাত্রীদের কাস্টোমার হিসেবেই বিবেচনা করবেন। সেধে এখন যেটুকু এফোর্ট দেন তখন হয়তো তা আর দিবেন না। তাদের কাজ ক্লাশ নেয়া পরীক্ষা নেয়া, তারা তা নিবেন, কেউ পড়ে আসলো কি না কিংবা নকল করে পরীক্ষা দিলো কিনা তা আর কেয়ার করবেন না। শিক্ষাব্যবস্থায় এসবের ফলাফল কি হবে আপনারা নিজেরাই বুঝুন!
এই গ্রেপ্তারের দিনটা ছাত্র ছাত্রীদের মনোভাবও পালটে দিবে। তারা আর শিক্ষকদের পাত্তাও দিবেনা। তারা জানবে দুই পয়সার কাজের লোকের মত শিক্ষককেও চাইলেই ছাঁটাই করে দেয়া যায়, জেলে পুরে দেয়া যায়। এবং এতে ডিজিটাল নকলসহ সব ধরনের নকলই উৎসাহিত হবে। কারন বাংলাদেশের জনগণ রায় দিয়েছে নকলের শাস্তি হওয়া উচিত মাথায় হাত বুলিয়ে বলা- বাবু আর এমন করো না! তারা জানবে সেটাই সঠিক, সেটাই তাদের অধিকার। আগে শিক্ষকেরা পরীক্ষার হলে গার্ড দিতেন, আর এখন থেকে বেঞ্চে বেঞ্চে গিয়ে শুধু সবাইকে বলবেন বাবুসোনা এমন করেনা! সামনের বেঞ্চ থেকে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে পেছনের বেঞ্চে যাবেন, পেছনের বেঞ্চে যেতে যেতে দেখবেন সামনের ছাত্রছাত্রীরা আবার অন্য পকেট থেকে নকল বের করে লেখা শুরু করেছে। জিনিসটা একটু ফানি শোনাচ্ছে, কিন্তু প্রিটিমাচ বিষয়টা ঠিক এই রকম যদি না ও হয় এর কাছাকাছি কিছুই হবে!
অনেক তো বিপ্লব করলেন। অনেক মানবতার বাণী শোনালেন। এখন এই নতুন বাংলাদেশকে গ্রহণ করার জন্য আপনারা প্রস্তুতি নেন...
©Shuvo Kamal
No comments:
Post a Comment