Sunday, October 25, 2020

কেউ কি আমায় একটু কু-রুচিপূর্ন কথাবার্তার কোন সজ্ঞা দিবেন...???

আমরা আসলে কু-রুচিপূর্ন কথা বলতে কি বুঝি...???
 
একটা পোস্টে 100 এর বেশি কমেন্ট হলেই সেখানে কিছু কমেন্ট এমন থাকে যে "ডাক্তাররা এমন কু-রুচিপূর্ন কথা বলে যা কোয়াক দের থেকেও খারাপ" বা "এমন কু-রুচিপূর্ন কথাবার্তা ডাক্তার সমাজ থেকে আশা করা যায় না"
 
কেউ কি আমায় একটু কু-রুচিপূর্ন কথাবার্তার কোন সজ্ঞা দিবেন...??? 
 
Just for curiosity. 
 
এমন একটা গ্রুপে কেউ কি পোস্ট দাতাকে গালি-গালাজ করে...???
কেউ কি তাদের পার্সোনাল লাইফ নিয়ে উল্টাপাল্টা বলে...???
নাকি কেউ " দেখে নিবো পারলে সামনে আসিস "এমন কিছু বলে...???
 
যদি বলে থাকে প্রমান সহ এডমিনদের দিন তারা তাকে ব্যান করে দিক। সহজ সমাধান।
কিন্তু তা না করে কেউ কেউ পুরো ডাক্তারদের বিশেষ করে জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশ্য করে এমন কমেন্ট গুলি করে থাকেন...!!! ক্যানো স্যার আপনার কি ক্ষতি করেছে তারা...???
 
ডাক্তার অন্য পেশায় গেলে আপনার সমস্যা...!!!
ডাক্তার E-commerce এ মাছ, ভাত, বিরিয়ানি বেচলে আপনার সমস্যা....!!!
ডাক্তার CMU করলে আপনার সমস্যা...!!!
ডাক্তার PGT করলে আপনার সমস্যা...!!!
ডাক্তার GP করলে আপনার সমস্যা...!!!
ডাক্তার খ্যাপে গেলে আপনার সমস্যা...!!!
 
 
এতো এতো সমস্যা দিতে পারেন, একটা সমাধান সাথে লিখে দিতে পারেন না...???
 
 
জ্বর থেকে শুরু সব রোগী ই তো specialist রা দেখে, রেফারেল সিস্টেমের 'র' ও তো তৈরি হলো না আজ প্রযন্ত।পারলে সেটা করা হোক... জ্বর সর্দিকাশির চিকিৎসা দিতে দিতে অনেকেই সিম্পটোমেটিক চিকিৎসার বাইরে কিছু চিন্তা করতে পারে না,ডায়াগনোসিস প্রেস্ক্রিপশনে লিখতে অনেকেই হ্যাজিটেট থাকে...এই কাজ তো জুনিয়র রা করবে ভাই... তারা জ্বর সর্দিকাশির চিকিৎসা দিবে আর আপনার কাছে রেফার্ড করবে " যান স্যারকে দিয়ে চেক করিয়ে নেন"।এখন বলতে পারেন আমাদের জুনিয়ররা তো ওতো ভাল না যে রোগী ছাড়বে, তো ভাই আপনি কি করতেছেন, আপনিও তো ছাড়ছেন না।সেই দূর গ্রামে গিয়ে ও দেখা যায় আপনার একটা চেম্বার রয়েছে। জুনিয়ররা দিন কিভাবে চালাবে শুধু আপনার এসিস্ট্যান্ট হয়ে আর আপনার হাস্পাতালের MO হয়ে...??? এটাই কি চাচ্ছেন সবাই...!!!
 
 জুনিয়র দের কোন ব্যাবস্থা না করে শুধু ভুল ধরার পক্ষে আমি নেই...
 
 
বেশিরভাগ পোস্ট এর কমেন্ট গুলি এনালাইসিস করলে দেখাযায় পোস্টগ্রাজুয়েট করা ডাক্তারগন ও অনেক নারী চিকিৎসক গন এসবের বিরুদ্ধে বেশি বলে থাকে... এর কারন কি আমার জানা নেই, নৈতিকতা বিরোধী সকল কাজকে আমি নিজেও ঘৃণা করি,কিন্তু CMU করা PGT করা মানেই সে সেটা কিছুই পারে না বা সে মেডিকেল সাইন্স নিয়ে ছেলেখেলা করছে এমন তো না...!!!
কিছু খারাপ লোক আছে,সেটা কোথায় নেই...??? বড় বড় ডিগ্রী নেয়া ডাক্তারের মধ্যেও আছে কিন্তু তাই বলে সবাইকে এক পাল্লায় মাপা কি উচিৎ...??? 
 
মেডিকেল কলেজ আসলে মিডেলক্লাস বা লো ক্লাস থেকে আসা ছাত্রদের জন্য ই না, মেডিকেল হলো এলিট শ্রেণীর জন্য... তাদের জন্য যাদের বাবা অথবা হাজবেন্ড সাপোর্ট রয়েছে...6 বছর কোর্সের পরেও যার বাবা বলতে পারবে মা তুমি পড় আমি খরচ চালাচ্ছি অথবা হাজবেন্ড বলবে "ওগো আমি আছি, তুমি শুধু বড় ডাক্তার হও"
 
আর ড্রামাটিক পরিবর্তন করতে হলে চুরি ডাকাতি অনেক কিছু আছে তা করবে, ডাক্তারির মত মহান পেশায় এসে CMU PGT এসব করে এই পেশাকে কলংকিত করার অধিকার কারো নাই...
MBBS কোর্স টা 10 বছর করা যায় কিনা ভেবে দেখবেন,একসাথে post-graduation সহ তাতে অন্তত জুনিয়র ডাক্তারদের দুঃখ কিছুটা ঘুচবে আর বড় বড় ডাক্তারদের মাথাব্যাথা ও কমবে...
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন, ভালো না লাগলে এড়িয়ে যাবেন।
 
 
 শেবাচিম
2011- 12

Sunday, August 9, 2020

এগুলো বহুদিন ধরে চলে আসা ট্রেন্ডের অংশ!

 

এমবিবিএস পাশ ডাক্তার সাধারণত ২০-২৪ হাজার টাকা প্রতি মাসে বেতন পান বাংলাদেশে।

এই বেতন আমাকে কখনোই আকৃষ্ট করে নি! কোন পথও আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না!

প্রথম জব ইন্টারভিউ দেই একটা মাল্টিন্যাশনাল বায়োমেডিকেল কোম্পানিতে। তৎকালীন হোটেল শেরাটনে ইন্টারভিউ হয়েছিল।

যে কোন ইন্টারভিউ তে আমার এ্যাপ্রোচ খুব সহজ- সর্বাবস্থায় সত্য কথা বলা। কনভিন্স করার জন্য মিথ্যা আমি বলি না।

বায়োমেডিকেল কোম্পানিতে বলেছিলাম টাকাটা এমআরসিপি দেয়ার জন্য দরকার। এই বয়সেও বাবার টাকা খেতে খেতে লজ্জা লাগে। সিলেক্টেড হয়েছিলাম, যাইনি আর। কারণ লেখাপড়া বিসর্জন দিয়ে কোন চাকরিতে যাওয়া টা বরাবরই আত্মঘাতী মনে হয়েছে আমার। ওদের শর্তটা ওরকম ছিলো কিছুটা।

এরপর গেলাম একটা ভিন্ন ধারার স্বাস্থ্য সংস্থায়। ইন্টারভিউ বোর্ডে জিজ্ঞেস করলো সামনে তো এফসিপিএস পার্ট- ওয়ান তোমার, মাত্র এক সপ্তাহ আগে ইন্টার্নশিপ শেষ করেছো! তো পরীক্ষায় ক্ষতি হবে না?

বলেছিলাম, পরীক্ষার জন্য ৬ বছর পড়েছি, পার্ট-১ শুধু এই ক‘দিনের চেষ্টায় কেউ পাশ করতে পারে না! আগের কষ্টগুলোই পাশ করার জন্য যথেষ্ট।

চাকরিটা পেয়েছিলাম। কিন্তু ক‘দিন পরেই যখন ছাড়তে গিয়েছিলাম তখন এমডি বলেছিলেন- "আমরা জানতাম তুমি থাকবে না। তবুও কেন যেন ইচ্ছে হলো আমার জামাইর। ও তোমাকে জোর করে নিয়েছিলো!"

আমি তখনো বুঝিনি উনাদের কেন মনে হয়েছিল আমি থাকবো না! কারণ চাকরির বাজারে আমার দাম সম্পর্কে ধারণা তখনো হয় নি!

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বেশিরভাগ ডাক্তারেরই এই ধারণা থাকে না! আর সেই সুযোগে ঢাকা শহরের একজন ভিক্ষুকের আয়ের সম পর্যায়ের স্যালারি হাসপাতালগুলো দিয়ে থাকে এবং তাতেই খুশিমনে সব ডাক্তার রাজি এবং গর্বিত হতে থাকে! অথচ রোগীকে কিন্তু আকাশচুম্বী পয়সা খরচ করতে হচ্ছে- যেটা তার ধারণা ডাক্তারের পকেটেই সিংহভাগ যায়!

সরকারী হাসাপাতালেও প্রচুর অনাচার দেখতে হত।

যেমন একটা খুব ফ্রিকোয়েন্ট ঘটনা ঢাকা মেডিকেলের ইমারজেন্সীতে ঘটতো। রোগীকে অপারেশন করে বা দরকারী চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়ার পরেই দাদুরা (ওয়ার্ড বয়+ আয়া) এককোণে নিয়ে যা বলতো তার ধরণটা মোটামুটি এমন-

"ডাক্তারের ফিস দেন।
- কত?
- দেন যা দিবেন ১০০০, ২০০০ যা দেন!


- ডাক্তাররে তো সরকার পয়সা দেয়! টিকেট কেটে আসছি! তাইলে আবার দিবো কেন?
- আরে বুঝেন না! এগুলা নতুন হইলে কি হইবো? কসাইর মতো লোভ! মইরা গেলাম যন্ত্রণায়!"
রোগী এবার মোটামুটি কনভিন্সড। একজন লোভের শিকার নির্যাতিত গরীব মানুষকে তো পয়সা দেয়াই যায়!

সরকারী হাসপাতালে যত জনের কাছে এমন টাকা দিয়ে থাকেন, সব ১০০% ফ্রি এবং ওই লোকগুলো নিজেরা এভাবেই জীবন ধারণ করে!

মাঝখান দিয়ে ডাক্তারের নামে কালিমা লেপন করে দিয়ে যায়! 

 

আমাদের দোষ এখানে দুটো-

১. এসব পাবলিককে ব্যাখ্যা করে বুঝাই না,

২. দায়িত্বশীলদের হাতে প্রমাণ সহ এদের কীর্তি দেখিয়ে সিস্টেমটা বদলাতে সচেষ্ট হই না।

পুরো মেডিকেল সেক্টরেই ডাক্তারের নাম ভাঙিয়ে কতজন যে পয়সা নেয় তার ইয়ত্তা নেই!

সহজ-সরল বাঙালি আমরা তাতেই বিশ্বাস করি! কারণ নাম ভাঙিয়ে খাওয়া লোকগুলো আপনার আন্চলিক ভাষায় কথা বলে, আপনার মত করেই চটুল কথা বলে, আপনার মতো সাধারণ বেশ-ভূষা নিয়েই চলে- কিন্তু তারাই ঠকিয়ে! নতুন হওয়া ওই ডাক্তারের মন এখনো সম্পূর্ণ পবিত্র, মাথায় রাজ্যের চিন্তা আর হৃদয়ে তারুণ্যের উত্তেজনা। আপনাকে ঠকিয়ে খাওয়ার মত ইচ্ছে বা সুযোগ কোনটাই তার নেই! যা দেখা যায় তার পিছনেও একটু তাকানো উচিৎ।

সেদিন দেখলাম মাসিক ১৬০০০ টাকা বেতনে একটা হাসপাতালে ডাক্তার নিয়েছে, যাকে আবার প্রথম ২ মাসের বেতন দেয়া হবে না! তাতেও সেই ডাক্তার খুব সন্তুষ্ট! এমবিবিএসের পিছনে তার অনেক খরচ হয়েছে তাই!

কাল থেকে দেখছি এক হাসপাতালের এমডি অত্যন্ত বাজে আচরণ করেছে এক ডাক্তারের সাথে! এগুলো বহুদিন ধরে চলে আসা ট্রেন্ডের অংশ! সাথে হুমকি, লান্চনা ও নিরাপত্তাহীনতা তো আছেই! গত কয়েক বছরে নারী চিকিৎসকরাও রেহাই পায়নি এদের হাত থেকে! দেশের মানুষ একটু নরম-সরম দেখলে বাজিয়ে দেখবেই! শক্ত মানুষের সাথে যে এরা পারে না!

সাথে আছে ‘পাশের বাসার আন্টি‘ এর মতো একই লেভেলের বুদ্ধি আর চিন্তাভাবনা সর্বস্ব সাংবাদিকগুলো! প্রশিক্ষণ বিহীন চাকরির ভয়ংকর কিছু উদাহরণ!

হাসপাতালে চাকরি শুরুর ৩ মাস পরেই নানা কারণে বুঝে গিয়েছিলাম দেশে থাকলে ক্লিনিক্যালে থাকা আমার চলবে না! অবনতি হতে হতে জুনিয়র ডাক্তারদের কসাইখানা হয়ে গেছে ওগুলো! সিদ্ধান্ত নিতে তাই দেরি করিনি।

তবে স্বজাতির ভোগান্তি দেখলে খারাপ লাগে, ভীষণ খারাপ লাগে!

Dr Zuhayer Ahmed
MBBS (DMC), 2007-08
MPH (Health Economics),
MSc (Public Health Intelligence),
Chevening Alumnus,
Foreign and Commonwealth Office,
UK.


Tuesday, July 14, 2020

ডাক্তারকে নিয়ে বলার আগে হাজারবার ভাবুন


শারমীন বানু আনাম, আটলান্টা (যুক্তরাষ্ট্র)
প্রথম আলো, ২৯ এপ্রিল ২০২০
 
 
জনগণের এক বুলি, ডাক্তাররা তাদের ট্যাক্সের টাকায় পড়ে ডাক্তার হয়েছে, তাই তাদের জন্য জীবন উৎসর্গ করতেই হবে। এই ফালতু কনসেপ্ট কে এদের মাথায় ঢুকিয়েছে? বাকিরা কার বাপের টাকায় পড়ে? ওই যে ট্যাক্সের কোটি টাকার গাড়িতে যারা চড়ছে, তাদের একবেলা আপনাদেরই ট্যাক্সের টাকার গাড়িতে লিফট দিতে বইলেন একবার!
 
সরকারি সব স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিই ভর্তুকির টাকায় চলে। মাস্টার্স পাসের পর লোকজনের পড়াশোনার খরচ নাই। ডাক্তারদের আছে। দেশের বাইরে ডিগ্রি আনতে গেলে সে খরচ তো ধরলাম ই না। সেগুলোও পকেট থেকেই যায়। সরকারের ভর্তুকিতে প্রতিটা বাঙালিই পড়ে, প্রাইভেট বাদে। প্রতিটা ডাক্তারই ট্যাক্স দেয়, এভারেজের চেয়ে বেশিই দেয়। তাই ডাক্তারেরা শুধু জনগণের টাকায় পড়ে, সেটা বলার আগে নিজেদের মুখটা চেপে রাখাই উচিত।
 
ভর্তুকি কোথায় নেই? কৃষি খাতে আছে, গার্মেন্টসে আছে, পুলিশ, সামরিক বাহিনী, সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি—সব জায়গাতেই আছে। আমলাদের বেতন কোথা থেকে আসে?
 
সরকারি বিনিয়োগ না হলে, দান না হলে, ইউনিভার্সিটি হতো না? ব্যক্তিমালিকানায়ও হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দানের জমিতেই প্রতিষ্ঠিত। জনগণের জন্য হসপিটাল না হলে চিকিৎসা হতো না। মেডিকেল কলেজ না হলে, ডাক্তার হতো না জনগণের চিকিৎসা দিতে! মেধাবীরা ডাক্তারিতে না গেলেও হয়তো হতো! কারণ, সন্ত্রাসীরাও পেট ফাড়ে! কিন্তু আপনার অ্যাপেন্ডিক্স বার্স্ট হলে আপনি সন্ত্রাসীর ছুরির নিচে যান না। বিশ্বাস করে কার কাছে যান?
 
ডাক্তার। ডাক্তারের কাছে। কারণ বিশ্বাস। ডাক্তারই একমাত্র আপনার ভালো চায়, আপনার পরে সেভাবেই তাদের ট্রেনিং।
 
তাদের কোনো দিন ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে আপনার অপারেশন করতে?
বা কারও অপারেশন করতে বা দেখাতে? তারা তাদের কাজের দাম নিয়েছে মাত্র।
এখন আসি, যা সবাই বলে, সেবার মানসিকতা! সেটা না থাকলে কার দায় পড়ে ২০-৩০ বছর এক্সট্রা বা বুড়ো বয়স পর্যন্ত পড়তে?
 
সেবার মানসিকতা? আপনি এই কথাটা প্লিজ সবাইকে বলেন, পয়সা নয়, সেবার মানসিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেন। প্লিজ এই কথা রাজউককে বলেন, ভূমি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফার্ম, পুলিশ, পাসপোর্ট অফিস, বিমান, আইনজীবী, রাজনীতিক সবাইকে বলেন। ইভেন মহাখালীর ডিজি অফিসকে বলেন। ঘুষ ডাক্তারের অফিসে যায়, না কোথায় যায়, সেটা আপনারা সবাই জানেন। কেরানি হাজার কোটি টাকা কই পায়?
 
বলবেন তো ডাক্তার কমিশন খায়, ডাক্তার ফার্মাসির পয়সা খায়। ডাক্তার যদি শুধু জেনেরিক ওষুধ লেখে, প্রতিটা ফার্মা আর তার সঙ্গে জড়িত লোক না খেয়ে মরবে। আরও আছে, ওই ওষুধ না লিখলে আপনারা নতুন ওষুধ কোথায় পাবেন?
 
কিন্তু জানেন কি? সরকারি হাসপাতালে দেশে কোনো মেশিনই চলে না। তাদের ২৪/৭ চালানোর পর্যাপ্ত মেশিন নেই। টেকনিশিয়ান নেই। ডাক্তারদের কারণে বা তাদের জন্য?
 
না রে ভাই, ডাক্তাররা ৪২ লাখ টাকার পর্দা, কোটি টাকার মেশিন কেনে না! সেগুলো চালায় না। সেগুলো কে চালায়? প্রশাসন। ফার্মার ওষুধ রোগীদের বিনা মূল্যে কে দেয়? ডাক্তার। তাদের ওষুধ না লিখলে, লাখ লাখ, কোটি কোটি লোক ওই ফ্রি ওষুধ পাবে না।
 
হাসপাতালে টিকিট কে দেয়? হাসপাতালে নিয়ম কারা বানায়? ডাক্তার? না রে ভাই। কলুর বলদের মতো ডাক্তাররা কাজ করে, প্রশাসনের কারণে বদনামের ভাগী হয়। ডাক্তারের কাজ রোগী দেখা, প্রেসক্রিপশন লেখা পর্যন্তই। ওষুধ খাওয়ানো, নল লাগানো, বেড দেওয়া, ট্রলি, খাবার দেওয়া, ফ্লুইড দেওয়া, রক্ত দেওয়া নার্সের কাজ, সহকারীদের কাজ। অত নার্স আছে আপনার? ডাক্তাররা সেই কাজটিও করে, আপনাদের সুবিধার জন্য। একবারও বলে না সেটা তাদের দায়িত্ব নয়।
 
কোনো খারাপ ডাক্তার নাই? থাকতে পারে ০.০০১ শতাংশ, যেখানে অন্য জায়গায় ভালো লোকের সংখ্যা ০.০০১ শতাংশ, পার্থক্য সেখানে।
 
আরেকটা বিষয়, প্রতিটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কারণই হলো আপনি শিক্ষিত হবেন, স্কিল শিখবেন, ওয়ার্কফোর্সে যোগদান করবেন। ডাক্তারিও তাই, যাস্ট প্রফেশন। যার কাজ সেবা দেওয়া। সেবার বিনিময়ে জীবনধারণের অর্থ উপার্জন করা। শুধু শুধু তাদের কাছে আকাশকুসুম আশা না করাই উচিত। এটা তাদের কাজ। তারা কর্মী মাত্র। তারা রাজা-রানি নয় যে শুধু গাঁটের পয়সায়, বিনা মূল্যের সেবা দিয়ে যাবে। রাজার করও আদায় হয় জনগণের কাছ থেকে। মুলো, আলুটা বিনা পয়সায় পান প্রতিদিন, না ইলিশটা ফ্রি পান?
 
শুধু ডাক্তারের দায় পড়ছে জীবন তেজপাতা করার?
আবার ভাবেন একবার, এরা যদি ডাক্তার না হয়ে, প্রশাসনের সব পদ দখল করত, বাকিরা ডাক্তার হতো- নিজেদের কী অবস্থায় পেতেন?
 
বাঙালি এক ঘরেই থাকতে পারল না দু-চার সপ্তাহ। ডাক্তারের সমালোচনা করার যোগ্যতাই এদের নাই! সমালোচনা করতে হয়; নিজেদের সমালোচনা করেন আগে। সেটা তো পারবেন না। দুনিয়ার সবচেয়ে ভালো মানুষ আপনি। দোষ সব ডাক্তারের।
 
সেবার কথাগুলো চালচোরদের বলেন, বলেন তাদের, যারা সবকিছুতে বাঁশ দেয়, সিমেন্টের বদলে অন্য কিছু দেয়, পয়সা বিদেশে পাচার করে, ব্যাংক চেটেপুটে খাইছে তাদের। এই কথাগুলো যারা রাস্তায় মানুষ মারে তাদের বলেন। এই কথাগুলো যারা রাস্তায় মানুষ নামাল তাদের বলেন। 
 
ভালোমানুষি সুন্দর কথাগুলো তাদের বলেন যারা দূরত্ব বজায় রেখে টেঁটা মারছে, মরদেহ রাস্তায় ফেলে যাচ্ছে, হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা না দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছে, মিথ্যে বলে অন্যদের সংক্রমিত করছে, মরলে খাটিয়া দিচ্ছে না, ঘরে জায়গা দিচ্ছে না, তাদের বলেন। সবাই ভালো হলেই বাঁচবেন। এত দিন তো অনেকের হক মারলেন।
 
যারা ঘরে না থেকে সংক্রমণ ছড়াল, তাদের বলেন। যারা চিকিৎসকের ন্যায্য প্রোটেকশন না দিয়ে, নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে বলেন, নিজেরা ঘরে লুকিয়ে, তাদের বলেন। যারা চিকিৎসকের পিপিই নিয়ে ফটোসেশন করে বেড়াল, তাদের বলেন কেন তারা এসব করল?
 
আর এখনো কষ্ট করে সবার ঘরে থাকা নিশ্চিত করেন। ১৫০-৫০০ ভেন্টিলেটরের একটাও আপনাদের কপালে জুটবে না। আরও সহজ করে বলি, ওই ভেন্টিলেটর চালানোর জন্য আমার মনে হয় না একজনেরও আইসিইউ লেভেলের ট্রেনিং আছে দেশে।
 
ডাক্তাররা চাইলেই ঘরে বসে আপনাদের তামাশা দেখতে পারত। কিন্তু সেটা তারা করছে না। সংসার- সন্তানদের ফেলে কাজে যাচ্ছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শেখেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কেউ ছোট হয় না।
ভয় করেন। প্রার্থনা করেন সৃষ্টিকর্তার কাছে, যাতে আপনি বা আপনারা সুস্থ থাকেন। আর করোনার পরে যে অর্থনৈতিক ডিপ্রেশন হবে, তার থেকে বাঁচতেও প্রার্থনায় থাকেন।

করোনা আমাদের সামনে স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার কংকাল পর্যন্ত তুলে ধরেছে

তিন মাস আগেও দেশের সকল পেশেন্ট মারা যেতো শুধু চিকিৎসকের অবহেলায়!!!
 হঠাৎ কি হয়ে গেলো এখন মারা যাচ্ছে অক্সিজেন সংকট, যন্ত্রপাতি সংকট, আই,সি,ইউ সংকট, অক্সিজেন মাস্ক সংকট, বেড নেই এসব কারনে!!! 
 
শুনেন রে ভাই আগেও এসব কারনেই মারা যেতো ৯০ ভাগ। তখন সব দোষ ডাক্তারের উপর চাপিয়ে ফেইসবুকে ভাইরাল হবার ধান্দায় না থাকলে বা সব দোষ ডাক্তারের উপর চাপিয়ে নিউজ না করে যদি এসব নিয়ে নিউজ করতেন তবে এই সংকট এখন কিছু হলেও কমতো। ডাক্তার ই স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার একমাত্র সমাধান না। 
 
আগে ডাক্তারদের বাধ্য করেছেন বেড ফুল হয়ে গেলেও বাড়ান্দায়, সিড়িতে, যে চিপাই পাওয়া যায় পেশেন্ট ভর্তি দিতে হবে। ৫০০ বেডের হাসপাতাল সেট আপে ২০০০ পেশেন্টের সেবা দিতে হবে এবং তাও পার্ফেক্ট ভাবে। 
 
করোনা পেশেন্ট যখন বাড়ান্দায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছেনা এখন দেখছেন বেড সংকট। একচুয়ালি বাড়ান্দায় বা সিড়িতে কখনোই কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যায়না। তখন বেড বাড়ানোর জন্য সোচ্চার হননি। সিগারেটের দাম বাড়লে আন্দোলন করতে পারেন ১৬ কোটি মানুষের দেশে এতো কম হাসপাতাল বেড কেনো সেটা নিয়ে কিছু বলেন নি। সব দোষ ডাক্তারের ঘাড়ে দিয়ে সমাধান খুজেছেন। 
 
নতুন নতুন হাসপাতাল হোক। আধুনিক হাসপাতাল হোক সেটা চাননি বরং চলে গিয়েছেন ভারত বা সিংগাপুর । এখন যাওয়া যাচ্ছেনা এখন চিল্লাচ্ছেন কোয়ালিটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নেই।
 
ডাক্তারদের উচ্চতর শিক্ষা বা প্রশিক্ষনের কথা কখনো চিন্তা করেন নি নানা ভাবে সেখানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন । তাদের ইউনিয়নেই রাখার জন্য চেস্টা করেছেন সব সময়। ইউনিয়ন সাবসেন্টারে কি সেবা দেয়া হয়??? দুইটা প্যারাসিটামল, বি কমপ্লেক্স দিয়ে রেফার্ড করার জন্য চিকিৎসক প্রয়োজন হয়না স্বাস্থ্য সহকারীরাই পারে।
 
এখন আর ওই দিন নাই যে যোগাযোগ ব্যাবস্থার অবস্থা খারাপ। গ্রাম থেকে মানুষ উপজেলায় আসতে পারেনা। এখন রোগ হলে উপজেলায় না মানুষ ডিরেক্ট জেলায় যায় তাও রেফার্ড হয়ে এবং টাইম লস হয়ে। 
 
কোয়ান্টিটির দিন শেষ, কোনোরকম বাড়ান্দায় রেখে চিকিৎসাদেয়ার দিনও শেষ।
 পর্যাপ্ত সয্যা বাড়ান লাগলে ৩ গুন করেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির দিকে বেশি মনোযোগ দিন। চিকিৎসকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করুন। অত্যাধুনিক হাসপাতাল করুন।
 
করোনা আমাদের সামনে স্বাস্থ্য ব্যাবস্থার কংকাল পর্যন্ত তুলে ধরেছে এর থেকে শিক্ষা না পেলে ভবিষ্যতে কপালে খারাপ কিছুই আসছে। মনে রাখবেন চিকনগুনিয়া যায় ডেংগু আসে ডেংগু যায় করোনা আসে এভাবে চলতেই থাকবে৷
 
কার্টেসিঃ Atiquthzzaman Somap

Friday, February 7, 2020

না তোমার পরিবারে কেউ আছে যে- তোমাকে বুঝবে, আর না তুমি পারবে কাউকে তোমার সিচুয়েশন বোঝাতে.


·

এমন একটা প্রফেশনে ভুল ক্রমে চলে এসেছি, যেখান থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব সবার সাথেই সম্পর্কের চূড়ান্ততম তিক্ততায় জড়িয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন!
.
যেখানে এখন আর মানুষ হিসেবে আমায় মূল্যায়নের সময় নেই কারো; বরং চলছে এই প্রফেশনকে ঘিরে ভবিষ্যতের বাকি রয়ে যাওয়া বিবিধ সব ডিগ্রীর বাটখারায় "প্রতিষ্ঠিত হবার" নিয়মিত মাপজোখের চলমান বুলডেজার প্রক্রিয়া।
.
যে বন্ধুকে হাসপাতালের আউটডোর থেকে গ্যাসের বড়ি, ব্যাথার বড়ি তুলে দেয়া লাগতো মেডিকেল স্টুডেন্ট পরিচয় দিয়ে; জোগাড় করে দেয়া লাগতো ডাক্তার হয়ে যাওয়া সিনিয়র রুমমেট ভাইয়াদের থেকে কলম আর প্যাড... সেই বন্ধুই এখন সুযোগ বুঝে ইনবক্সে স্মরণ করিয়ে দেয়, "কোম্পানির লোকজনের কাছ থেকে একটি কলম নেয়াও হারাম!"
.
যেই আমি- কখনো আমায় কেউ ভুল বুঝলে তার সেই ভুল ধারণা ভাঙ্গানোর আগে পর্যন্ত স্থির থাকতে পারতাম না... সেই আমিই জেনেশুনে সবাইকে সুযোগ করে দিচ্ছি আমাকে একটু একটু করে ভুল বুঝবার, দূরে ঠেলে দেবার।
.
মোটামুটি চেনাজানা- এমন মানুষ গুলো ভুল বুঝলেও নাহয় ইগ্নোর করা যায়। কিন্তু আপন মানুষ গুলোই যখন একে একে সব বেঁকে থাকবে, ভুল বুঝবে- সেখানে ভুল ভাঙ্গানোর মত অফুরন্ত সময়, স্ট্যামিনা আসল কথা "ইচ্ছাশক্তি" - কিছুই আর অবশিষ্ট থাকেনা।
.
নিজের পরিবারে বা নিজের পরিজনদের ভেতর সেইম প্রফেশনের কেউ না থাকলে, অন্তত এই যুগে এসে এই প্রফেশনে আমার মতো গোবেচারা কারোই আসা উচিৎ না। না তোমার পরিবারে কেউ আছে যে- তোমাকে বুঝবে, আর না তুমি পারবে কাউকে তোমার সিচুয়েশন বোঝাতে...🙂
.
আর দশজনের জীবনকে দীর্ঘায়িত করতে এসে, কখন যে নিজের জীবনকেই তুমি সংক্ষিপ্ত করে ফেলবা- নিজেও বুঝবা ন

Written by
Golam Mahade Hasan