Monday, January 4, 2021

কোভিড থেকে বেঁচে ডিসচার্জ নিলেই কি ভোগান্তি শেষ? লং কোভিড কী জিনিস?


১. বাংলাদেশে অনেকেই কোভিডকে পাত্তা দিচ্ছে না এই ভেবে যে মৃত্যুর হার তো দেশে কম। যার আপন পরিবারের উপর এসে লাগছে না তারা ছাড়া সবাই খুব নিশ্চিন্তে আছে। কিন্তু অনেকের সাথে কথা বলে, নিজের ও নিজের রোগীদের অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে আসলেই অনেক ভোগান্তি আছে লং টার্ম।
 
২. যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগ্যান স্টেইটে একটা স্টাডি করেছে দেখার জন্যে যে কোভিড হওয়ার ৬০ দিন পর রোগীরা কেমন আছে দেখার জন্যে। তাদের প্রশ্ন একটাই - দুই মাস পর রোগীর হইলটা কি? 
 
৩. প্রথমত তাদের মৃত্যুর হার অনেক বেশি - ১৬৪৮ রোগীর মধ্যে ৩৯৮ জন হাসপাতালেই মারা যায়। তাছাড়া ১২৫০ জন যাদের ডিসচার্জ করা হয় তাদের মধ্যেও ৮৪ জন ডিসচার্জের পর মারা যায়। তাদের মৃত্যুর হার ২৯.২% মোট!! যারা বেঁচে যায় তাদের মধ্যে আরো ১৮৯ জন কে (১৫.১%) পুনোরায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগে দুই মাসের মধ্যেই। 
 
৪. ডিসচার্জ করা রোগীদের মধ্যে ৪৮৮ জনকে ফোনে ইন্টার্ভিউ করা হয়। ৩৩% এর এখনো কাশি, শ্বাসকষ্ট রয়ে গিয়েছে। ২৩% রোগী এখনো সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গেলে প্রচন্ড শ্বাসকষ্টে ভোগে। ১৯% রোগীর উপসর্গে কোন উন্নতি হয় নাই, বরং অনেকের অবনতিও হয়েছে। 
 
৫. আরো ভয়ংকর হলো যে ৪৯% বলেছে যে তাদের মানসিকভাবে দুর্বল লাগছে, কষ্ট হচ্ছে। প্রায় ১০% রোগীর জীবনের সব সেভিংস শেষ। ৭% বলছে যে তারা হিসেব করে খাবার কেনা, র্যাশান করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে কারণ টাকার টানাটানি।
 
৬. যারা আগে চাকরি করত তাদের ৪০% এখনো কাজে ফিরে যেতে পারেনাই। যারা পেরেছে তাদের ২৬% সময় কমিয়ে কাজ করছে কারণ ফুল ডিউটি করার মত অবস্থা নাই।
 
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে হয়তোবা একটু কম হবে সংখ্যাগুলা যেহেতু আমাদের পপুলেশান অনেক ইয়াং। কিন্তু যাদের হয়েছে বা পরিবারের কারো সিভিয়ার কোভিড হয়েছে তাদের প্রশ্ন করে দেখুন। 
 
আর্থিকভাবে, মানসিকভাবে কী যন্ত্রণা গিয়েছে তাদের। পরিবারের একজনের আইসিইউতে ভর্তি হলেই ঋনে চলে যেতে হয়েছে অনেকের। যখন যা ইচ্ছা তাই করছেন, ভেবে দেখবেন যে একবার আসুস্থ হলে, বা পরিবারের কেউ হলে কী দুঃখ যে করা লাগবে।