Tuesday, February 20, 2024

বুড়া বয়েসে টাকা কামায় কি বাপ-মায়ের কবরের উপরে তাজমহল বানাবি?? ( যারা ডাক্তার হতে স্বপ্ন দেখে দিন পার করছেন , তাদের জন্য)

 দরিদ্র মেধাবীদের মেডিকেলে চান্স পাওয়ার সুসংবাদ দেখতে পাচ্ছি। তাদের জন্য শুভকামনা।


ক্লোজ সার্কেলের কেউ হলে বলতাম গরীবের সন্তানের সাত বছরে গ্রাজুয়েশন করে পঁচিশ হাজার টাকার চাকরি করা পোষায়না। এগুলো সচ্ছল পরিবারের ব্যাপার স্যাপার। তারা ছেলে-মেয়ের পরে নাতি-নাতনিও পুষতে পারে। চল্লিশ বছরে গিয়ে ইনকাম শুরু করলেও ক্ষতি নাই। 


তোর পরিবার পাশ দেয়ার সাথে সাথেই আশা করে বসে থাকবে তুই নতুন ঘর তুলবি, টিউবওয়েল বসাবি, পায়খানা পাকা করবি। গ্রাজুয়েশন করার পরে পোস্টগ্রাজুয়েশন করতে আরো সাত-আট বছর লাগবে। 

এই চোদ্দ বছরের সংগ্রামের কথা তুইও জানিস না, তোর বাপ-মাও জানেনা। বুড়া প্রফেসরের পসার দেখে ছেড়া কাথায় শুয়ে মনে মনে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখিস। পাশ দেয়ার পরে ক্লিনিকে কাজ করে যে টাকা হয় তাতে বাচ্চার দুধের টাকা হয়না বলে অনেক ডাক্তার ভাই উবার চালায়। তুই গরীবের বাচ্চা, তোর এই ROI বা রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট কোন হিসাবেই মেলেনা।

 অনেক বড়লোক ডাক্তার আপ্পি প্রাইভেটে জব করে পুরা স্যালারিই সিএনজি-ওয়ালাকে দিয়ে দেয় জাস্ট এটা বলার জন্য যে অমুক জায়গায় আছি। এগুলা স্ট্যাটাস সিম্বল। তুই গরীবের বাচ্চা, তোর মাসকাবারি খরচ জোটেনা, মেডিকেলের বই কিনতে এলাকায় চান্দা তোলা লাগে, তোর এগুলা সাজে?!


মেডিকেলে চান্স পেয়েছিস মানে লেখাপড়ায় ভালো এবং পরিশ্রম করতে পারিস। তোর যাওয়া উচিত ত্রিশের আগে টাকা কামানো যায় এমন কোন রাস্তায়। বুড়া বয়েসে টাকা কামায় কি বাপ-মায়ের কবরের উপরে তাজমহল বানাবি??


এগুলো  সেন্টিমেন্ট বাদ দে। 

বাপ-মায়ের ওষুধ না কিনে, ঘরের বউকে নতুন কাপড় না দিয়ে আর বাচ্চার দুধ, ডায়াপারের কৌটা জোগাড় করতে না পারলে কেউ মানবসেবা করতে পারেনা। তুইও পারবিনা। দিন শেষে হতাশ হবি। মানুষের প্রতি বিরক্ত হবি। এই প্রসেস দিয়ে বের হতে হতে মানবসেবার মানসিকতা থাকবেনা। কসাই হয়ে যাবি।


ক্লোজ সার্কেলের জুনিয়র ভাই হলে এইসব বলতাম। কিন্তু, পাবলিক প্লাটফর্মে এরকম জঘন্য, কদর্য, অমানবিক ক্লাসিস্ট কথাবার্তা বলা যাবেনা। তাই কিছু বললাম না।


©Kaiser Anam

No comments:

Post a Comment