Wednesday, October 5, 2016

সব আনন্দ জগানন্দের...(মেডিক্যাল ভর্তি ইচ্ছুকদের প্রতি এই লেখাটি উৎসর্গকৃত)



সব আনন্দ জগানন্দর ই।তা না হলে এ ইঁদুর মারার কলে লেজটা সবার আগে ও ই বাড়িয়ে দেবে কেন ? ইঁদুর মারার কল মানে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার কথা বলছি।আজকে ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের হলে যে ছেলেটি সবার আগে প্রবেশ করে তার নাম জগানন্দ রায়।

শার্টে শরীরটা আঁটছেও না সাঁটছেও না।বাংলা কিংবা তামিল ছবির নায়কের মতোই ফেটে ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
আমি ওকে বললাম ‘পাঁচ মিনিট পড়ে ঢুকো’।

মাজা মোচড়াতে মোচড়াতে সে খানিকটা দূ্রে গেল ঠিক ই।ঘাড়ের একটা রগ ত্যাড়া হলে কিংবা কলেজের ভিপি হলে যা হয়,তাই হল। সে সাথে সাথেই ফিরে এল ‘ঐ রুমে যে সবাই ঢুকছে?’

এমন ভাবে চোখ পাকালাম ভিপি জগানন্দ আর রা করলো না..
আমরা হাতের কাজ শেষ করে দরজা খুলে দিলাম...
দুদ্দাড় সবাই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলো...অগ্যস্ত যাত্রার রিহার্সেল।
নির্বাক আটপৌ্রে দর্শক আমি।




নিষেকের পর ডিম্বক যে দশা প্রাপ্ত হয়-তাকে কি বলে ?
খাতা সাইন করতে করতে চোখ আটকে গেল কোশচেন টা তে।যেন কুয়োর মধ্যে নিজের প্রতিবিম্ব দেখছি।আজ থেকে ১৪ বছর আগে আমিও এমন এক ডিম্ব কে নিষিক্ত করে মেডিক্যাল লাইফের ভ্রুনের জন্ম দিয়েছিলাম।
যার ঘানি এখনও টানছি।

কুয়োর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের নিশ্চিত ‘কামড়া-কামড়ি’র ভবিষ্যতটা দেখতে পাচ্ছি।চাইছিলাম ‘সাদিয়া জাহান টুম্পার’ সব গুলো এন্সার যেন ভুল হয়।সে যেন গ্রে-গাইটনের দিস্তা দিস্তা কাগজের কালো অক্ষরে চাপা না পড়ে...
চাইছিলাম, সে যেন না পড়ে ‘চিকিৎসকের অবহেলায় রুগীর মৃত্যু’ নামক হলুদ সাংবাদিকতার পাতা ফাঁদে।
আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলাম এই অর্থহী্ন চাওয়া টা আমার পাপবোধের ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিতে কোন লাভাকে উপর-মুখ করতে পারলো না।




জগানন্দের খাতাটা সাইন করছি...
হলে ঢোকাতে তার যত না তাড়া ছিল ‘গুলতি’ পূরনে যেন ততটাই অনীহা।
এন্সার শীট যেন সাইবেরিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চল।বসতি-হীন।
অনেককে দেখলাম ঢাকা শহরের বস্তির মত পুরোশীট ভরে ফেলছে কালো কালো গোল্লা গোল্লা খুপড়িতে।তাদের জন্য মায়া হল।

নির্ঘাত জগানন্দকে বাসা থেকে জোর করে পাঠানো হয়েছে।

মনে মনে ভাবছি মেডিক্যালে চান্স না পেলে সিউরলি সে জগতের কোন আনন্দ থেকেই বঞ্চিত হবে না।
বন্ধুর বিয়ে খাওয়ার আনন্দ,অফিস শেষে পেট চেদরিয়ে শুয়ে থাকার আনন্দ,ডাক্তারের পিণ্ডি চটকানোর আনন্দ।রাত-বিরেতে ঘুম না ভাঙ্গার আনন্দ।আইটেম পেন্ডিং না খাওয়ার আনন্দ।সাপ্লি না খাওয়ার আনন্দ।
কোন আনন্দ থেকেই বঞ্চিত হবে না জগানন্দ।

এ হাতেই হয়ত ভাংগবে ডাক্তারের চেম্বার।




জানের ভয়ে হয়তো জুতা ফেলেই দে-দৌড় দিবে এ হলেরই কেউ একজন।
ব্যস্ত ডাক্তার।
ভাংচুর হবে তার চেম্বার
কারন রোগীর মৃত্যুর জন্য আজরাইল না ডাক্তার সাব দায়ী, তিনি তো 'অমরত্ব' নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন।
আমি তার খাতাটাই সাইন করতে খুঁজছি।
কে সে ?

>> কালেক্টেড পোস্ট <<

No comments:

Post a Comment