Thursday, November 17, 2016

সত্য ঘটনার উপরে ভিত্তি করে লেখাটা লিখা (অতি গোপনীয়)

শুনলাম, ট্রেনিং পোশট নিয়ে ভানুমতির খেলা শুরু হয়েছে। এ জিনিসটা অনেক আগেই আন্দাজ করেছিলাম। অনেক মেডিকেল কলেজ কিন্তু ট্রেনিং পোশট নেই।পোশট গেল কই? অনেক পুরানো এই লেখায় জবাব পেতে পারেন।
 ২ মার্চ , ২০১৫ সালের লেখা এটি।
..........................................................................................................

আইজকে আমি আপনাদের যেই গল্পটা বলবো সেইটে আপনেরা সকলে জানেন। হয়ত অনেকে জানেও না।
আমি মেলা হীশাব নিকাশ কইরে দ্যাখলাম, ডাক্তার আছে তিন পদের। একপদ এম বি বি এস পাস দিয়া বিসিএস দেয়, গেরামে যাইয়া কাচা টেকা পয়সা দেইখখা লোভ সামলাইতে পারে না , এইডা করে ,ওইডা করে , আল্ট্রা করে, ফোড়া কাডে আর মাল কামায়। এগো জীবনের মকছদ আর কিছুই থাকে না। শেষ বয়সে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর চীফ হয়, নাইলে সিভিল সার্জন হয়।

গল্পের সুবিধার জন্য মনে করি , দ্বিতীয় শ্রেনীর প্রতিনিধি একজন এর নাম "লাবনী" আর তৃতীয় শ্রেনীর একজনের নাম "জাফর "
দ্বিতীয় পদের ডাক্তার (লাবনী) হইলো বাপ মা এর আদরের দুলাল আর দুলালী। বাপের বেশুমার কালো টেকায় তারা ভিকারুন্নেছায় পড়ে , নটরডেমে পড়ে ,ইন্টার পাস সরকারী কুনু জায়গাতে চান্স পায়না। শেষে গিয়া ভর্তি হয় হয় ব্রাক ভার্সিটিতে নাইলে একটা বেসরকারী মেডিকেলে।

তৃতীয় পদের ডাক্তার (জাফর) হইলো , মধ্যবিত্ত পরিবারের যাগো আব্বা ছোট খাট চাকুরী কইরা অনেক কস্ট কইরা পোলা মাইয়ারে ডাক্তার বানাইছে নিজের মানসিক শান্তির জন্য, আর পোলাটা / মাইয়া টা যেন দুধে ভাতে থাকে সেই জন্য নিজে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম কইরা পোলাপানরে মানুষ করে।

প্রথম পদের ডাক্তারদের কথা বাদ। তারা সিভিল সার্জন হইবো, তারা গ্রামে টাকা কামাইতেছে, কামাইতে থাকুক।
দ্বিতীয় শ্রেনীর ডাক্তাররা (লাবনী) কিভাবে তৃতীয় শ্রেনীরে ( জাফর) শোষন করতেছে আজ তার গল্প বলি। যারা বেসরকারী মেডিকেলে ভর্তি হয়, স্বাভাবিক ভাবেই তারা সরকারীতে পরুয়াদের থেকে মেধায় অনেকাংশে দূর্বল ( তবে বেসরকারীতে প্রচুর ভালো ছাত্র আছে যারা এফ সি পি এস / এম ডি তে চান্স পাচ্ছে) ।

দূর্বল মেধার এত বিপুল সংখক চিকিতসক প্রতি বছরই নামসর্বস বেসরকারী মেডিকেল থেকে পাস করে বের হচ্ছে। এরা এত বছর কোন পোস্ট গ্রাজুয়েশন পরীক্ষায় কিছু করতে পারতো না। এদের সময় কাটতো বিভিন্ন ক্লিনিকের খ্যাপ বা ডিউটি নিয়ে কামড়া কামড়ি করে।

৩৩ তম বিসিএস এই বিশেষ শ্রেনীর জন্য আশীর্বাদ নিয়ে আসে। ৬৫০০ জনের বিপুল সঙ্খ্যক নিয়োগের জন্য ,যারা হয়তো জীবনেও কোনদিন বিসিএস এ কোয়ালিফাই করতে পারতোই না, তারাও চাকরী পেয়ে যায়। চাকুরী হইলো, এইবার পোস্টিং যখন হবে তখন এই লাবনীর মনে অনেক দুর্ভাবনা। কারন তার দেশের বাড়ী সন্দ্বীপ। সেখানে পাঠাইলে তার ঢাকার ঠাটবাট আর থাকবে না। আর জাফরের বাড়ি হইলো সাভারে। পোস্টিং এর সময় লাবনী প্রতাপশালী পিতার অঙ্গুলীহেলনে নিজ নিজ থানায় পোস্টিং এর নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে লাবনীর পোস্টিং হয় জাফরের উপজেলায়, সাভারে। আর জাফরকে যাইতে হলো সন্দীপে।

সাভারে কিছুদিন থাকার পরেই লাবনীর আর ভালো লাগেনা, ঢাকা থেকে সাভার অনে এ এ এ ক দূরে, আর কেমন যেন ময়লা ময়লা লাগে সবকিছু। সে ডিজি হেলথে যায় । তার অনেক সখ ছিলো ঢাকা মেডিকেলে পড়ার। পড়তে যেহেতু পারে নাই, এসিস্টেন্ট রেজিস্ট্রার হইয়া সে দেখাইয়া দিবে যে খবিরুন্নেছা মেডিকেল থেকে পাস করেও ঢাকা মেডিকেলে ঢোকা যায়। কিন্তু মাত্র চাকরির ৬ মাস অতিক্রান্ত হোওয়ায় এবং এফ সি পি এস/ এম ডি পার্ট ১ না থাকায় ডিজি তারে দিলো ফিরাইয়া। তখন লাবনী গেল তার আব্বুর কাছে, আব্বু আবার তার জাদু দেখাইলো। ফলে ৩৩ বি সি এস সহকারী সার্জন লাবনী চাকরীর ৬ মাসেই , কোন পার্ট ১ ছাড়াই সরাসরী ঢাকা মেডিকেলের রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পেয়ে গেল।

এইবার আসেন দেখি, জাফর কি করে? সে দুই বছর সাগর পাড়ি দিয়া লাবনীর এলাকার লোকজনকে সেবা দিয়া গেল । তারপরে যখন দুইবছর শেষ হইলো, সিলেট মেডিকেলের সাবেক ছাত্র , মেডিসিনে এফ সি পি এস পার্ট ১ পাস করা জাফর গেল ঢাকা মেডিকেলে একটা ট্রেইনিং পোস্ট এর জন্য । কিন্তু সেখানে কোন পোস্ট খালি ছিলো না। যা খালি ছিল, তা লাবনীরা সব দখল করে রেখেছে দেড় বছর আগেই। জাফরদের এখন দীর্ঘদীন গ্রামেই থাকতে হবে। ট্রেনিং ? সে তো দুরাশা

( সত্য ঘটনার উপরে ভিত্তি করে লেখাটা লিখা। গত ৩ মাসে ৩৩ বিসিএস প্রায় ৩৩ জন চিকিতসক নিয়ম বহির্ভুত ভাবে বিভিন্ন মেডিকেলে পোস্টিং নিয়েছেন। এমনকি গতকালও তায়রেন্নুছা মেডিকেলের সাবেক ছাত্রকে আই এম ও পদের একটি সরকারী মেডিকেলে পদায়ন করা হয়। এই সব অর্ডার অতি গোপনীয়। হাতে হাতে তৈরী করে হাতে হাতেই দিয়ে দেয়া হয় )

No comments:

Post a Comment